লুনার ল্যান্ডার তৈরির কার্যাদেশের বিনিময়ে নাসার ২ বিলিয়ন ডলার খরচ দেবেন জেফ বেজোস
দীর্ঘ কয়েক দশক পর চাঁদে মনুষ্যবাহী অভিযান পরিচালনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। এ গৌরবের ভাগীদার হতে চান বিশ্ব সেরা ধনকুবের জেফ বেজোসও।
আজ সোমবার (২৬ জুলাই) বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা ব্লু-অরিজিনের এ প্রতিষ্ঠাতা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি মহাকাশ সংস্থা- নাসা তার কোম্পানিকে চাঁদে নভোচারীদের অবতরণ যান- লুনার ল্যান্ডার প্রস্তুতের কার্যাদেশ দিলে তিনি সংস্থাটির ২০০ কোটি ডলার খরচ নিজ পকেট থেকে দেবেন।
ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন- নাসা চন্দ্রাভিযানের লক্ষ্যে আগামী দুই অর্থবছরে সরকারি বাজেট থেকে এ পরিমাণ অর্থ খরচ করতো, যা ওই মেয়াদে মওকুফ করবেন বেজোস।
এছাড়া, পৃথিবীর নিম্ন-কক্ষপথে নিজস্ব পাথফাইন্ডার মিশনও পরিচালনা করবে ব্লু অরিজিন। এসবের বিনিময়ে কোম্পানিটি সরকারি সংস্থাটির কাছে নির্ধারিত মূল্যের কার্যাদেশ দেওয়ার অনুরোধ করেছে।
নাসার প্রশাসক বিল নেলসনকে লেখা খোলা চিঠিতে বেজোস বলেছেন, "এই প্রস্তাব মূল্য সংযোজনের জন্য দেওয়া হয়নি, বরং আলোচিত খরচ স্থায়ীভাবে মওকুফ করবে তার কোম্পানি। প্রস্তাবটি বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাই সরকারি সংস্থাকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমাও দেওয়া হবে।"
মহাকাশ পর্যটন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব সেরা ধনকুবেরদের প্রতিযোগিতা জমে উঠেছে।
ইতঃপূর্বে, গত এপ্রিলে আরেক মার্কিন বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেস এক্স- এর সঙ্গে ২৮৯ কোটি ডলারের একক চুক্তি করে নাসা। চুক্তির আওতায় চাঁদে মনুষ্য অবতরণের পরবর্তী প্রজন্মের লুনার ল্যান্ডার তৈরির কাজ পেয়েছে স্পেস এক্স।
নাসা একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই মূল চুক্তিতে স্পেস এক্স'কে নির্বাচিত করে। এজন্য স্পেস এক্স, ব্লু অরিজিন ও ডায়নাটিক্স নামক তিনটি বেসরকারি কোম্পানিকে ১০ মাসের গবেষণা চুক্তির অন্তর্ভুক্ত করেছিল সংস্থাটি।
তবে বেজোস হাল ছাড়ার পাত্র নন। পৃথিবী সেরা এ উদ্যোক্তা সারাজীবন ধরেই তার অদম্য চেষ্টার পরিচয় দিয়েছেন। নাসাকে দেওয়া সাম্প্রতিক প্রস্তাবেও ছিল তার স্পষ্ট ইঙ্গিত।
খোলা চিঠিতে তিনি লেখেন, "শুধুমাত্র একটি উৎস থেকে সরঞ্জাম সংগ্রহ না করে, নাসার উচিত তাদের মূল কৌশলকে অনুসরণ করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া। যথাযথ প্রতিযোগিতা না হলে চুক্তি বাস্তবায়নের কিছুদিনের মধ্যেই ডিজাইন পরিবর্তন, নির্ধারিত সময়সীমা পেড়িয়ে যাওয়া, খরচ বৃদ্ধিসহ নানামুখী সমস্যায় পড়বে নাসা। এসব বিষয়ের পুনঃআলোচনায় সংস্থার হাতে বিকল্পও কম থাকবে।"
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ সীমায় বা মহাকাশের দ্বারপ্রান্তে পাড়ি জমান জেফ বেজোস ও তার কোম্পানি ব্লু অরিজিনের কর্মীরা।
প্রায় কয়েক মিনিট বায়ুমন্ডলের সীমানায় সীমিত মধ্যাকর্ষণের আবহে ভেসে বেড়ানোর পর তাদের বহনকারী যানটি ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডের যাত্রা শেষ করে। এরপর একটি ক্যাপসুলের সাহায্যে বেজোস ও তার সহযাত্রীরা পৃথিবীর বুকে ফিরে আসেন।
তবে বেজোসের আগেই এ অর্জন করেন আরেক বিলিয়নিয়ার রিচার্ড ব্রানসন। তিনিও ভার্জিন গ্যালাকটিক নামক একটি মহাকাশ পর্যটন কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে বেজোস ও ব্রানসনই প্রধানত দুই উদ্যোক্তা যারা পর্যটকদের মহাশূন্যের প্রান্তসীমায় ভ্রমণের অফার দিচ্ছেন।
- সূত্র: সিএনবিসি