ডেঙ্গুর উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নিলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না: স্বাস্থ্যের ডিজি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ বি এম খুরশীদ আলম বলেছেন, দেশে বর্তমানে কোভিড রোগীর থেকে নন কভিড রোগী অনেক বেশি। এরই সাথে এখন বেড়েই চলছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গুর নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় সরকারের হাতে। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনসহ পৌরসভাগুলো এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে পুরো বছরই কাজ করে তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ খুব বেশি কঠিন নয়।
ডেঙ্গুর উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নিলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মার্চ মাসেই আমরা সবাইকে চিঠি দিয়েছি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। এর আমাদের মূল দায়িত্ব চিকিৎসা দেওয়া আর এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মূল কাজ করতে হবে সিটি কর্পোরেশনের। যেভাবে রোগী বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে আর বেড বাড়ানো সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ডেঙ্গু ও করোনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
খুরশীদ আলম আরও বলেন, মহামারী করোনাভাইরাস যাতে আর না বাড়ে যে জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে হবে। করোনা বেড়ে গেলে সামাল দেয়া যাবে না। রাতারাতি হাসপাতাল বাড়ানো যাবে না। হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো হয়েছে। এটার একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কর্মহীন লোকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এ কারণে আমাদের করোনা নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, আমরা মাঝে মাঝে অনেক সমালোচনার মুখে পড়ি। সমালোচকরা অসুস্থ হলে কোথায় চিকিৎসা নিতে আসেন, যে ডাক্তার ও চিকিৎসা দেয় তাদেরকেই আপনারা সমালোচনা করেন।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালগুলো আর রোগী সংকুলান করতে পারছে না। তবে সরকার সাধ্যমত চেষ্টা করছে পরিস্থিতি উত্তরণে। করোনা সংক্রমণ কমে আসছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকার বয়স্কদের টিকার আওতায় আনতে সব ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এ সপ্তাহে প্রায় ৫৪ লাখ ভ্যাক্সিন আসবে এবং এ মাসে এছাড়াও ৫০ লাখ ভ্যাক্সিন আনা হবে। এ মাসেই প্রায় ১ কোটি টিকা নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার লোক নিয়োগ দিয়েছি। অল্প দিনে আমরা আরও ৪/৫ হাজার টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিবো। আমরা বিভিন্নভাবে ভ্যাকসিন পাচ্ছি। কোভ্যাক্স থেকে আমরা ভ্যাকসিন পাচ্ছি, নিজেরাও কিনছি। আমাদের ৮০ শতাংশ লোককে ভ্যাকসিন দিতে হলে ২৬ থেকে ২৭ কোটি ভ্যাকসিন লাগবে। এত ভ্যাকসিন আমরা একসঙ্গে পাব না, রাখতেও পারব না। সে জন্য যখন যে ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, সেটা আমরা আমরা আনার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র ভ্যাকসিন বানিয়েছে এবং স্টক করেছে। তাদের যা জনসংখ্যা, তার থেকে চার-পাঁচ-ছয় গুণ তারা স্টক করে রেখেছে। অথচ এমন অনেক দেশ আছে, যেখানে এখনো ভ্যাকসিন পৌঁছায়ইনি। আমরা ভাগ্যবান যে শুরুতেই ভ্যাকসিন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম এবং পেয়েছি।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বিল্লাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ প্রমুখ।