রংপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রিমান্ডে ৩৭ আসামি
রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ৫৫ আসামির মধ্যে ৩৭ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে পীরগঞ্জ আমলি আদালতে ৩৮ আসামিকে তোলা হয়। ৩৭ আসামির তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মাহবুব রহমান আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানান। শুনানি শেষে ৩৭ জনকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন বিচারক ফজলে এলাহী খান। বাকি এক আসামি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় তাকে শিশু আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধক (জিআরও) শহিদুর রহমান। তিনি জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ৩৮ আসামিকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, রাষ্ট্রপক্ষের ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
এদিকে অগ্নিকাণ্ড, লুটপাট ও হামলার ওই ঘটনায় উজ্জ্বল হাসান (২১) ও আল আমিন (২২) নামের দুই তরুণ গত বুধবার (২০ অক্টোবর) গ্রেপ্তার হন। তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বাড়াতে ফেসবুকে পোস্ট করে হিন্দুপল্লিতে হামলার আগে উগ্রবাদীদের উত্তেজিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুজনের বিরুদ্ধে নতুন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া উজ্জ্বল হাসান রামনাথপুরম ইউনিয়নের মাঝিপাড়া বড়করিমপুর এলাকার পাশের বড় মজিদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পড়ালেখার পাশাপাশি বেঙ্গল দরজি প্রশিক্ষণ নামের একটি সেলাই প্রশিক্ষণ দিতেন।
আল আমিনের বাড়ি পীরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কিশোরগাড়ি গ্রামে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা ছাড়াও তারা দুজন হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পৃথক মামলারও আসামি। অন্য আরেকটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত পরিতোষ সরকার (১৯)।
গত সোমবার রাতে জয়পুরহাট জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ফেসবুকে উসকানিমূলক মন্তব্যের বিষয়টি স্বীকার করেন পরিতোষ।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৭ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উগ্রবাদীরা। এখন পর্যন্ত অগ্নিসংযোগ, হামলা, লুটপাট ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।