পীরগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা পূর্বপরিকল্পিত ছিল: র্যাব
রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে আজ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এ হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার অন্যতম হোতা সৈকত মন্ডল ও সহযোগী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তারের একদিন পরেই এ কথা জানালো র্যাব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, "স্নাতকের শিক্ষার্থী সৈকত ফেসবুকে নিয়মিত উস্কানিমূলক পোস্ট করতেন। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার দাবি করেন। কুমিল্লার ঘটনার পর, তিনি ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট করেন, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ৩ হাজার অনুসারীর কাছে পৌঁছে এবং সহিংসতাকে উসকে দেয়। সহযোগী রবিউলকে তিনি মেগাফোনের সাহায্যে উত্তেজক বক্তৃতা প্রদানের মাধ্যমে হামলাকারীদের জড়ো করার নির্দেশ দেন। হামলার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান"।
তিনি আরও বলেন, "এদিকে হামলা ও অগ্নিসংযোগের আগে রবিউল মাইকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামবাসীকে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের মাধ্যমে উসকে দেয় এবং হামলায় অংশ নিতে জড়ো হতে বলে। এরপর তিনি তার এক সহযোগীকে মাইকিংয়ের দায়িত্ব দেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের নেতৃত্ব দেন। পরে সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়"।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে র্যাব কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন।
শুক্রবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গীতে অভিযান চালিয়ে সৈকত ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্সটি।
এ হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর পীরগঞ্জ উপজেলার বড় করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামের পরিতোষ ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফের একটি অবমাননাকর ছবি আপলোড করেন বলে অভিযোগ ওঠে, পরে এই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এর জের ধরে একদল উত্তেজিত জনতা তার গ্রামে আক্রমণ করে এবং অনেকগুলো ঘর পুড়িয়ে দেয়। সে হামলায় ৬০টিরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘটনার দিন ১৩৫টি বাড়ি ভাঙচুর ও ১৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। লুট করা হয়েছে গবাদিপশু ও অলংকার; এছাড়াও বাড়িঘরসহ আসবাবপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত অন্তত ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অভিযুক্ত পরিতোষ, যার ফেসবুক পোস্ট থেকে হামলার সূত্রপাত হয়েছিল, তাকেও দিন চারেক আগে পার্শ্ববর্তী জেলা জয়পুরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।