কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন মোদি
শেষ পর্যন্ত ভারতের বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় এক বছর ধরে ওই আইন নিয়ে আন্দোলন করছিলেন দেশটির কৃষকরা।
শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেন, "আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি। আমি বলতে চাই যে, হয়তো আমাদের চেষ্টাতেই ঘাটতি ছিল। তাই কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এই মাসে শুরু হতে চলা সংসদ অধিবেশনে এই কৃষি আইন প্রত্যাহার করব।
আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আসুন, আন্দোলন ছেড়ে একটি নতুন সূচনা করি। শীঘ্রই আইন প্রত্যাহারের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া পূর্ণ করে দেব। এবার আপনারা সকলে ক্ষেতে ফিরে যান, পরিবারের মাঝে ফিরে যান।"
শিখ ধর্মের প্রবক্তা গুরু নানকের জন্মদিনে মোদির এই ঘোষণা 'তাৎপর্যপূর্ণ' বলে মনে করছেন ভারতের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের একাংশ। কারণ কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থানকারী কৃষকদের বড় অংশই পাঞ্জাব এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের। তাদের মধ্যে শিখ এবং জাঠ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অনেক। আগামী বছরের শুরুতেই পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট।
নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, "আমি গত পাঁচ দশকে কৃষকদের দুর্গতি দেখেছি। তাই ২০১৪ সালে যখন দেশ আমাকে নির্বাচিত করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেয়, তখন থেকে ছোট কৃষকদের জন্যে কাজ করতে চেয়েছি। আজ কারোর ওপর দোষারোপ করার সময় নয়।"
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দেশের ছোট কৃষকদের কথা ভেবেই তিনটি কৃষি বিল আনা হয়েছিল। কৃষক সংগঠন, কৃষি অর্থনীতিবিদদের এই দাবি বহুদিনের। এর আগের সরকারও এ নিয়ে ভেবেছে। এরপরই সংসদে কৃষি বিল নিয়ে আলোচনা করে বিল পাস করানো হয়। কয়েক কোটি কৃষক এই বিলকে সমর্থন জানায়।
কিন্তু কৃষকদের স্বার্থে আনা এই বিল আমরা কয়েকজনকে বোঝাতে পারিনি। সেই কৃষকেরাই এর বিরোধিতা করছেন। তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি আমরা। আমরাও তাদের কথা বোঝার চেষ্টা করেছি। সরকার আইন বদলাতেও রাজি ছিল। এরই মাঝে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে চলে গেল।"
- সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা