কানাডা-আমিরাতে ঢুকতে না পেরে দেশে ফেরার গুঞ্জন, সকালের ফ্লাইটে দেখা যায়নি মুরাদকে
সদ্য বিদায়ী তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢুকতে না পেরে দেশে ফিরছেন বলে শোনা যাচ্ছিল।
শনিবার রাতে বিমানবন্দরের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে জানায়, মুরাদকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
মুরাদের দেশে ফেরার খবরে রোববার ভোর থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিড় করেন।
তবে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র অনানুষ্ঠানিকভাবে দাবি করেছে, সকালে এমিরেটসের ইকে-৫৮২ ফ্লাইটে ডা. মুরাদ আসেননি।
সাবেক প্রতিমন্ত্রীর পরিবারের এক সদস্য ইউএনবিকে জানান, মুরাদ কানাডা থেকে রাত সাড়ে ১০টার (বাংলাদেশ সময়) দিকে দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছান।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে তার আত্মীয় জানান, দুবাই প্রবেশের বৈধ ভিসা না থাকায় তিনি দেশে ফিরতে পারেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন ডা. মুরাদ হাসান। কিন্তু কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি তাকে সেদেশে ঢুকতে দেয়নি।
কানাডার স্থানীয় বাংলা অনলাইন পোর্টাল 'নতুন দেশ' পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্থানীয় সময় দুপুর ১.৩১ মিনিটে ডা. মুরাদ কানাডার টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। বিপুল সংখ্যক কানাডিয়ান নাগরিক কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন বলেও তাকে জানানো হয়।
পরে তাকে মধ্যপ্রাচ্যের বিমানে তুলে দেয়া হয়।
সম্প্রতি বিএনপি নেতা তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদ হাসানের দেওয়া 'অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ' বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এরপর ফাঁস হয় ঢাকাই সিনেমার একজন নায়িকাকে 'ধর্ষণ' এর হুমকি দেওয়ার একটি অডিও ক্লিপ। এরমধ্যে আরেকটি অনলাইন টকশোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের নিয়েও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতে দেখা যায় মুরাদকে।
তার এসব বক্তব্যের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছিলেন নারী অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। খোদ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকেও মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি উঠেছিল।
এসব বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য গত ৬ ডিসেম্বর ডা. মুরাদ হাসানকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন ৭ ডিসেম্বর 'ব্যক্তিগত কারণ' দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ।