কাজী আনোয়ার হোসেন যেভাবে মাসুদ রানা!
থ্রিলার বা রোমাঞ্চ সাহিত্যকে কেউ বলে সস্তা বা লঘু, কেউ আবার অকিঞ্চিৎকর। মূলধারার সাহিত্যে একে ঠাঁই দিতে নারাজ অনেকেই। কিন্তু সেই থ্রিলার লিখেই বাংলার পাঠকমনে চিরতরে জায়গা করে নিয়েছেন একজন ব্যক্তি।
শুধু তা-ই নয়, তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা ও দিকনির্দেশনায়, তাঁরই নিজ হাতে গড়ে তোলা প্রকাশনীর ব্যানারে, থ্রিলার ঘরানাতেই একের পর এক বই লিখে হাত পাকিয়েছেন আরও অসংখ্য গুণী লেখক। ফলে একসময় এদেশে নিছকই কচি চারাগাছের মতো মাটি ভেদ করে উঁকিমারা থ্রিলার সাহিত্য পরিণত হয়েছে মহীরুহে, মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে আকাশচুম্বী উচ্চতায়। জনপ্রিয়তাই বলুন কিংবা পাঠকের ভালোবাসা, তাতে ছাপিয়ে গেছে সাহিত্যের আর সব শাখা-উপশাখাকে।
বুদ্ধিমান পাঠকমাত্রই ইতোমধ্যে বুঝে ফেলেছেন, বাংলা ভাষায় থ্রিলার সাহিত্যের যে প্রবাদপুরুষের কথা বলছি, তাঁর নাম কাজী আনোয়ার হোসেন; সবার প্রিয় কাজীদা।
কেন সাহিত্যচর্চার চেনা পথ না মাড়িয়ে থ্রিলার সমুদ্রে অবগাহন করলেন কাজীদা? কেন হতে চাইলেন একদমই নতুন পথের পথিকৃৎ?
এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে ৭৫ বছর পূর্বে। কাজীদার তখন কৈশোর, বয়স মাত্র দশ। জ্ঞানের অনুকূল বাতাবরণে বড় হওয়া সেই কিশোর মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়তে থাকেন কলকাতা থেকে প্রকাশিত শ্রী হেমেন্দ্র কুমার রায়ের লেখা ঘটোৎকচ, যকের ধন, আবার যখের ধন, নৃমুণ্ডু শিকারী; শ্রী নীহাররঞ্জন গুপ্তের লেখা কালো ভ্রমর, ইস্কাবনের টেক্কা, কালো হাত; শ্রী শশধর দত্তের লেখা দস্যু মোহন ইত্যাদি থ্রিলার বইগুলো।
এর পরপরই তাঁর হাতে আসে রবিন হুড। লেখকের নাম জানেন না তিনি। সেসব খেয়াল করার বয়সও তখন নয় সেটা। কিন্তু বইটি অপূর্ব লাগে তাঁর। রবিনের মৃত্যুতে কেঁদেকেটে বুক ভাসান; তার বীরত্ব, সাহস, নেতৃত্ব, বিপদগ্রস্ত ও ভাগ্যাহতদের প্রতি দুর্বলতা, গরিবদের সাহায্য-সহযোগিতা, নারীর প্রতি সম্মান—এই সব গুণের প্রেমে পড়ে যান।
থ্রিলার বই পড়তে পড়তে কল্পজগতে থ্রিলের নেশা প্রবলভাবে যায় শৈশব-কৈশোরেই। সেই থ্রিলের আশায় একদিন ট্রেনে চেপে চলে যান ভৈরব। ভাঙা কাচ কুড়িয়ে বস্তা ভর্তি করে মনের আনন্দে আবার ট্রেনেই ঢাকায় ফেরার পর হাতেনাতে ধরা!
বলাই বাহুল্য, এভাবে থ্রিলার ঘরানাটির সঙ্গে নিজের অজান্তেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায় কাজীদার আজীবনের ভবিতব্য। তাই ১৯৬৩ সালের মে মাসে ২৭ বছর বয়সে বাবার দেয়া দশ হাজার টাকা নিয়ে সেগুনবাগান প্রেসের (যার পরবর্তী নাম হয় সেবা প্রকাশনী) যাত্রা শুরু করেন, তখন নিজের লেখার বিষয়বস্তু হিসেবে রহস্য-রোমাঞ্চ ঘরানাকেই বেছে নেন। ১৯৬৪ সালে জুন মাসে প্রকাশিত হয় কুয়াশা-১।
তবে কাজীদার হাত ধরে কালজয়ী চরিত্র মাসুদ রানার আত্মপ্রকাশ কীভাবে ঘটল, সে কাহিনি বেশ চমকপ্রদ। অনেকের কাছে অবিশ্বাস্যও ঠেকতে পারে। কিন্তু নিশ্চিত থাকতে পারেন, এ বৃত্তান্ত কাজীদার নিজের মুখেই বলা।
সময়টা ১৯৬৫ সাল। চলছে পাক-ভারত যুদ্ধ। এদিকে কাজীদার হাত ধরে একের পর এক প্রকাশিত হয়ে চলেছে কুয়াশা সিরিজের বই। কিন্তু এরই মধ্যে একদিন কাজীদার শিকারি-বন্ধু মাহবুব আমিন তাঁকে বলে বসলেন, 'কটা বই দেবেন তো আপনার, পড়ে দেখব কী লিখছেন!'
মাহবুব তখন লাহোরের আর.জি.এ রেডিও কোম্পানির ঢাকা-চিফ। তিনদিন পর ফের কাজীদার সঙ্গে দেখা হলো তাঁর। কাজীদা তো আশা করছেন, আর সকলের মতোই তাঁর বন্ধুবরও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হবেন তাঁর লেখার। কিন্তু এর বদলে তিনি যা বললেন, তাতে যথেষ্টই চমকে গেলেন কাজীদা। মাহবুব কুয়াশার বইগুলোর প্রসঙ্গ তুলে বললেন, 'খুব খারাপ তা বলব না, তবে বই তিনটে পড়ে যা বুঝলাম—আধুনিক রহস্য সাহিত্য সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই আপনার। একটা ইংরেজি থ্রিলারও পড়েননি আপনি, তাই না?'
কাজীদা স্বীকার করতে বাধ্য হলেন, সমসাময়িক কোনো ইংরেজি থ্রিলার পড়া হয়নি তাঁর। অবশ্য সেসব পড়ার প্রয়োজনীয়তাও তো বোধ করেননি কখনো! ভেবেছেন, 'আমি তো বাংলা লিখছি, ইংরেজি নয়।' কিন্তু তাঁর বন্ধু বললেন, 'দুনিয়ার কোথায় কে আপনার লাইনে কী কাজ করছে, সেটা জানতে হলে ইংরেজি ঘেঁটেই জানতে হবে আপনাকে।'
সেদিন বেশ একটা ধাক্কা খান কাজীদা। কালো হয়ে যায় তাঁর মুখ। কিন্তু তাঁর মনের অবস্থা বুঝতে ভুল করেননি মাহবুব। তাই বললেন, 'আপনার মনে কষ্ট দিয়েছি, সেজন্যে দুঃখিত। চলুন, আপনাকে একটা বই প্রেজেন্ট করব।'
যেই কথা সেই কাজ। মাহবুবের ছোট্ট ফিয়াট সিক্স হানড্রেড গাড়িতে চেপে ঢাকা স্টেডিয়ামের বিখ্যাত বইয়ের দোকান 'আইডিয়াস'-এ গেলেন কাজীদা। ওখান থেকে মাহবুব সাড়ে তিন টাকা দিয়ে ইয়ান ফ্লেমিঙের 'ডক্টর নো' কিনে প্রেজেণ্ট করলেন তাঁকে। ওইদিনই দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর বইটা নিয়ে বিছানায় উঠলেন। এবং চিরকালের জন্য কৃতজ্ঞ হয়ে গেলাম নিজের বন্ধুর কাছে। খানিকটা লজ্জাও পেলেন। ভাবলেন, 'সত্যিই, কী লিখি আমরা!'
এরপর কয়েক মাস ধরে যতগুলো ইংরেজি থ্রিলার পেলেন, একে একে সব পড়ে ফেললেন কাজীদা। সেসব বই পড়ার অভিজ্ঞতা থেকেই ঠিক করলেন, তিনিও লিখবেন স্পাই থ্রিলার। স্বদেশের প্রেক্ষাপটে, এক বাঙালি স্পাই। যে স্পাইকে আজ আমরা সবাই 'মাসুদ রানা' বলে এক নামে চিনি।
তবে এই মাসুদ রানা চরিত্র সম্পর্কে কিন্তু কাজীদার আগে থেকে কোনো ধারণাই ছিল না। তিনি শুধু জানতেন, দেশপ্রেমিক এক দুঃসাহসী বাঙালি যুবকের কাহিনী লিখতে চান। লিখতে লিখতে রানার চরিত্রটা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়েছে তাঁর নিজের কাছে। রানা কী, এবং কী নয়; সেটা বুঝতেও বেশ অনেকটা সময় লেগেছে। ফটো প্রিন্ট করার সময় কেমিক্যালে চুবানোর পর ছবিটা যেভাবে ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে, ঠিক তেমনই একটু একটু করে স্পষ্ট হয়েছে রানা কাজীদার কাছে।
মাসুদ রানা সিরিজের প্রথম বই 'ধ্বংস-পাহাড়'। ১৯৬৬ সালের মে মাসে প্রকাশিত হয় বইটি। তবে কেবল কিছু ইংরেজি থ্রিলার বই পড়েই যে তিনি এই বইটি লিখে ফেলেছিলেন, তা কিন্তু নয়। এই বই রচনার পেছনে তাঁর ছিল লম্বা প্রস্তুতি, নিরলস পরিশ্রম। মোটরসাইকেলে চেপে তিনি ঘুরে বেড়ান কাহিনির ঘটনাস্থল চট্রগ্রাম, কাপ্তাই এবং রাঙামাটি। আজ থেকে ৫৫ বছর আগেকার সেই সময়ে কোনো বাংলা বই লেখার পেছনে এমন ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অশ্রুতপূর্ব ঘটনাই বটে।
সরেজমিনে সবকিছু ঘুরেফিরে দেখে, এবং বন্ধু মাহবুব ও আরেক সিএসপি বন্ধু আতাউল হকের সাহায্য নিয়ে, পাণ্ডুলিপি গোছাতে কাজীদা সময় ব্যয় করেন পাক্কা সাত মাস। এভাবেই রচিত হয় বাংলা ভাষার প্রথম মৌলিক স্পাই থ্রিলার!
শাহাদাত চৌধুরী ও কোলাজ প্রচ্ছদ
সেবার প্রথম দিককার, বিশেষ করে কুয়াশার প্রথমদিকের বইগুলোর প্রচ্ছদ করতেন প্রখ্যাত শিল্পী হাশেম খান। এরপরে সেবা প্রকাশনীর প্রচ্ছদে নতুন ধারা তৈরি করেন বিচিত্রা সম্পাদক শাহাদাত চৌধুরী।
তিনিই প্রথম বিদেশি ম্যাগাজিনের ছবি অবলম্বনে বইয়ে কোলাজ প্রচ্ছদের ধারা চালু করেন। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত সেবা এই কোলাজের ধারাই ধরে রেখেছে।
স্মার্ট পাঠক তৈরিতে সেবার অবদান
সেবার স্বর্ণযুগে এমন কোনো লেখক সম্ভবত ছিলেন না, যারা সেবায় লেখেননি। সে তালিকায় ছিলেন রাহাত খান, শাহাদাত চৌধুরী, খোন্দকার আলী আশরাফ, হুমায়ূন আহমেদ, শাহরিয়ার কবির, মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রমুখ।
সেবার সবচেয়ে বড় অবদান পাঠক তৈরিতে। স্মার্ট পাঠক তৈরিতে সেবার ভূমিকা অনস্বীকার্য। কাজী আনোয়ার হোসেনের তৈরি করা স্মার্ট পাঠক প্রজন্মের সুফল পেয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। সেবা যে ধরনের বই করত, রানা থেকে শুরু করে ক্লাসিক, সেগুলো বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। বিশেষ করে সেবার অনূদিত ও রূপান্তরিত থ্রিলারগুলো ছিল সে সময়ের বেস্ট সেলার। সে কারণে পাঠকরা বিশ্বের সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারত।
কাজীদার এই বিপুল সাফল্যের ছিল একদল তরুণ, প্রতিভাবান, প্রাণশক্তিতে ভরপুর লেখকের। তাদের মধ্যে স্বনামে বিখ্যাত হয়েছেন শেখ আবদুল হাকিম, রকিব হাসান প্রমুখ।
কাজীদার শখ
এবার জানাই কাজীদার সম্পর্কে আরেকটি তথ্য, যা হয়তো অজানা অনেকের কাছেই। রহস্যপুরুষ নামে খ্যাত এই মানুষটির কিন্তু অবাধ বিচরণ ছিল সুরের ভবনেও। একসময় রেডিওতে নিয়মিত বাজত তাঁর গান। টিভিতেও গেয়েছেন তিনি, এমনকি গেয়েছেন চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক সিঙ্গার হিসেবেও।
তবে প্রথমবার শুনতে পরম বিস্ময়ের ব্যাপার মনে হলেও, সঙ্গীতের সঙ্গে ওঠাবসা কিন্তু কাজীদার সেই শৈশব থেকেই। তাঁদের বাড়িতে গানের চর্চা ছিল সবসময়। তাঁর তিন বোন সন্জীদা খাতুন, ফাহমিদা খাতুন ও মাহমুদা খাতুন রবীন্দ্রসঙ্গীতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই কাজীদা নিজে কখনো নিয়ম মাফিক সুরের সাধনা না করলেও, শ্রোতাকে সঙ্গীতের ইন্দ্রজালে মোহিত করার প্রতিভা বইত তাঁর ধমনীতে।
১৯৫৮ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বেতারের সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন কাজীদা। অন্যান্য মাধ্যমেও গান গেয়েছেন ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত। এছাড়া ১৯৬২ সালে তিনি ঘরও বাঁধেন সঙ্গীত জগতের মানুষ, কণ্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমিনকে। এই ফরিদা ইয়াসমিন ছিলেন এখানকার প্রখ্যাত সাবিনা ইয়াসমিনের বড় বোন।
গান কেন ছাড়লেন কাজীদা? এর নেপথ্য কারণ ব্যস্ততা ও সময়ের অভাব। প্রেস, প্রকাশনী, লেখালেখির কাজকে তিনি মনে করতেন জীবনযুদ্ধ। সেই জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে ক্রমশ এতটাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে, অচিরেই উপলব্ধি করেন এক পরম সত্য: সব একসঙ্গে হবে না, ছাড়তে হবে যেকোনো একটা কাজ। সেই একটা কাজ হিসেবে তাঁর জীবন থেকে কাটা পড়ল গানের অধ্যায়টাই।
সময়ের অভাবে পিছুটান ভুলে কাজীদাকে বিদায় বলতে হয়েছে তাঁর জীবনের আরো একটি শখকেও। সেই শখ মাছ ধরার।
একসময় খুবই ভালোবাসতেন মাছ ধরতে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতেন লেকের পারে। এভাবেই মাছ ধরার ঘোরের মধ্যে কেটে যায় কয়েকটা বছর। সেই বছরগুলোয় তাঁকে ঘিরে ছিল চার, মশলা, পাউরুটি, পিঁপড়ের ডিম; ছিপ, বড়শি, ফাৎনা, সুতা, হুইল। শিকার করতেন রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, আইড়, বোয়াল, গজার, চিতল—সে এক আলাদা জগৎ, আলাদা জীবন, অপার আনন্দ।
কিন্তু একসময় বোধোদ হলো তাঁর। বুঝতে পারলেন, এসব করতে গিয়ে সময় খুব নষ্ট হয়। তাছাড়া মাছ ধরার সঙ্গীরও অভাব হচ্ছিল। তাই ধীরে ধীরে তাঁর এই শখের মৃত্যু হয়।
ছাড়া এয়ার গান দিয়ে শিকার করতেও খুব পছন্দ করতেন তিনি। শিকারের নেশায় মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে পড়তেন। শিকারে তাঁর নিয়মিত সঙ্গী ছিলেন সেবার আরেক মহারথী রকিব হাসান।
একটি ভেস্পায় চড়ে মাছ ধরতে যেতেন কাজী আনোয়ার হোসেনের। ওই ভেস্পাটি পরে আরেক অনুবাদক নিয়াজ মোরশেদকে দিয়ে দেন।
তাছাড়া কাজীদার প্রিয় পোশাক ছিল জিন্স। আর খুব পছন্দ করতেন সানগ্লাস।
সেবার উত্থানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি সাদা রঙের ফোক্সভাগেন গাড়ি। এ গাড়ি নিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেন ঢাকার বাইরে যেতেন। শুরুর দিকে বই বিপণনের কাজও করতেন এ গাড়ি নিয়ে। এই ফোক্সভাগেনের কথা বারবার এসেছে কুয়াশার নানা বইয়ে।
একসময় মাছ পালার শখও ছিল তার। আশি-নব্বইয়ের দশকে যে-কেউ সেগুনবাগিচায় সেবা প্রকাশনীর কার্যালয়ে গেলেই গেটের পাশে দেখা যেত বড় চৌবাচ্চা, তাতে নানা প্রজাতির অ্যাকুরিয়াম ফিশ ছিল। ছিল শাপলা ফুলও। তাছাড়া একসময় কাজী আনোয়ার হোসেনের অফিসঘরেও ছিল বড় অ্যাকুয়ারিয়াম।
এসবের পাশাপাশি কাজীদা ছিলেন মেডিটেশনের ভক্ত। তার মেডিটেশনভক্তি শুরু হয় সেবায় পূর্বপরিচিত মহাজাতকের যাতায়াত শুরুর মাধ্যমে। তিনি ছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেনের পুরনো বন্ধু। সপ্তাহে একদিন সন্ধ্যায় কাজী আনোয়ার হোসেনের বাসায় মহাজাতক এবং জনকণ্ঠের প্রখ্যাত সাংবাদিক আহামেদ নূরে আলমকে নিয়ে মেডিটেশন আয়োজন করা হতো। এ পর্যায়েই সেবা থেকে মহাজাতকের বই বের হওয়া শুরু হয়।
শেষ জীবনে এসব শখ তার মধ্যে আর দেখা যায়নি। এ সময় তার অবসরের সঙ্গী ছিল নাতিরা।