পোর্ট এলিজাবেথে চোখ রাঙাচ্ছে হার
দক্ষিণ আফ্রিকার অতি রক্ষণাত্মক চিন্তার কারণে উপকারই হয়েছে বাংলাদেশের, ইনিংস ব্যবধানে অন্তত হারতে হচ্ছে না। কিন্তু হার যে অনিবার্য, সেটা বলাই বাহুল্য। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেই বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ফলো-অনে পড়লেও দক্ষিণ আফ্রিকা আবার ব্যাটিংয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। দ্রুত রান তুলে মুমিনুল হকের দলকে বড় লক্ষ্য দিয়েছে স্বাগতিকরা। সেটা তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকছে বাংলাদেশ।
৪১৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ শুরু থেকেই উল্টো পথের যাত্রী। দলীয় ১ রানেই প্রথম উইকেট হারানো দলটি ২৭ রানের মধ্যে আরও ২টি উইকেট খোয়ায়। ৩ উইকেটে ২৭ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ।
দুই প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজ ও সাইমন হার্মানের স্পিন তোপের মুখে ইতোমধ্যে সাজঘরে ফিরেছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়ক মুমিনুল হক ৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার এখনও ৩৮৩ রান। বাকি দুই দিনে ৭ উইকেট এই রান যে তোলা সম্ভব নয়, ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যায় সেটা বলাই যায়।
এ ছাড়া পোর্ট এলিজাবেথের সেন্ট জর্জেস স্টেডিয়ামের পরিসংখ্যানও বাংলাদেশের বিপক্ষে। এতো রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড টেস্ট ক্রিকেটেই যেমন হাতে গোনা, তেমনি এই মাঠে ৩০০'র বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডই নেই। এই মাঠে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার দখলে। ১৯৯৭ সালে ২৭০ রান তাড়া করে জিতেছিল অজিরা, এখন পর্যন্ত ওটাই সর্বো্চ রান তাড়া।
বাস্তবতা বলে ৪১৩ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা বাংলাদেশের জন্য 'অসম্ভব'। নিশ্চয়ই এটাকে সম্ভব করতেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামেনি সফরকারীরা। বুক চেতানো লড়াই হতে পারে বড় পাওয়া। কিন্তু এ পথে বিবর্ণ বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই মহারাজের বলে ভিয়ান মুল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন জয়।
শুরুর আঘাত সামলানোর আগেই বাংলাদেশ শিবিরে আবারও মহারাজের আঘাত। প্রোটিয়া এই স্পিনারের শিকার এবার শান্ত। ধীর স্থির মেজাজে ব্যাট চালানো তামিম ইকবালও ঠিকতে পারেননি। হার্মারের বলে মুল্ডারের হাতেই ক্যাচ দিয়ে থামেন ২২ বলে ১৩ রান করা অভিজ্ঞ এই ওপেনার। অন্য প্রান্তে মুমিনুল ৫ রানে তখন অপরাজিত। তামিম আউট হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ হয়।
এর আগে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৫৩ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ পুরো ইনিংসে ধুঁকিয়ে ধুঁকিয়ে ব্যাটিং করে। ৫ উইকেটে ১২৭ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করা সফরকারীরা তৃতীয় দিন ৯০ রান যোগ করে। প্রথম ইনিংসে ২৩৬ রানে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা দিলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১৩ রান।