আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বোমা হামলায় নিহত ৪৬: আফগান তালেবান মুখপাত্র
আফগানিস্তানের পূর্ব পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বোমাবর্ষণে অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আফগান তালেবান।
মঙ্গলবারের (২৪ ডিসেম্বর) ওই হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ঘটনায় আফগান তালেবান প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
আফগানিস্তানের ৪টি স্থানে এ বোমা হামলা চালানো হয় বলে আজ বুধবার জানিয়েছেন তালেবানের উপ-মুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিতরাত। হামলায় আরও ছয়জন আহত হয়েছেন।
তবে পাকিস্তান সরকার বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
'আফগানিস্তান এ বর্বর হামলাকে সমস্ত আন্তর্জাতিক নিয়মের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আগ্রাসনের উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করে… ইসলামিক আমিরাত এ কাপুরুষোচিত কাজের জবাব দেবে,' বলেছেন আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়াতুল্লাহ খোয়ারজমি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিমান থেকে বোমা হামলাটি পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি)-এর একটি শিবির লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে।
টিটিপি (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান) আফগান তালেবানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেও বর্তমানে তারা আফগানিস্তান শাসন করা তালেবানের সরাসরি অংশ নয়। সংগঠনটির উদ্দেশ্য পাকিস্তানে ইসলামি শরিয়া আইন প্রয়োগ করা, ঠিক যেমনটা তালেবানরা আফগানিস্তানে করেছে।
এর আগে গত শনিবার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে টিটিপির একটি বড় হামলায় ১৬ জন পাকিস্তানি নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানি বোমা হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই 'ওয়াজিরিস্তানি শরণার্থী', যারা পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তান এলাকা থেকে পালিয়ে এসেছিলেন।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। পাকিস্তান বলছে, আফগানিস্তানের ভেতরে অবস্থান নিয়ে টিটিপি তাদের দেশে হামলা চালাচ্ছে। তবে আফগান তালেবান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চলতি বছরের মার্চে দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। তখন তালেবান অভিযোগ করে, পাকিস্তান আফগান ভূখণ্ডে দুটি বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে পাঁচজন নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন।
সে সময় পাকিস্তান স্বীকার করেছিল, তারা আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছে। তবে অভিযানের বিস্তারিত জানায়নি দেশটি।