মুসলিম ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে পাত্রী খোঁজার বিজ্ঞাপন যেভাবে যুক্তরাজ্যে ভাইরাল হয়েছে
জানুয়ারির শুরুতে লন্ডন আর বার্মিংহামের রাস্তায় বড় বড় বিল বোর্ডে দেখা যায় এক অদ্ভুত বিজ্ঞাপন। বেগুনি রঙা সেসব বিলবোর্ডে ২৯ বছর বয়সী ফিনান্সিয়াল কনসালটেন্ট মুহাম্মাদ মালিকের পাত্রী খোঁজার বিজ্ঞাপন তাকে রাতারাতি তারকায় পরিণত করেছে।
তার সেই অনুসন্ধান গণমাধ্যমের কল্যাণে বিপুল সংখ্যক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেইসাথে findMALIKawife.com ওয়েবসাইটে তিনি প্রায় ৫,০০০ মানুষের সাড়া পান। যেখানে বিয়েতে আগ্রহী পাত্রী ছাড়াও অনেকেই তাকে সমর্থন জানিয়ে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মুসলিম ডেটিং এপ 'মুজম্যাচ' মালিকের এই স্টান্টকে তাদের বিজ্ঞাপন কৌশল হিসেবে প্রকাশ করেছে। বিবাহইচ্ছুদের জন্য পাত্র-পাত্রী খুঁজতে তারা মালিকের ওয়েবসাইটের সাথে মিলিতভাবে কাজ করবে বলে জানায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকেই এই ভাইরাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের প্রশংসা করলেও, অনেকে এটাকে অনৈতিক বলে অভিহিত করেছেন। আবার বিলবোর্ডে ব্যবহৃত হওয়া "এরেঞ্জড ম্যারেজ থেকে আমাকে বাঁচাও" শিরোনামের জন্য কেউ কেউ এই ঘটনাকে ইসলামভীতির জালে আরেক পা এগিয়ে যাওয়া হিসেবে অভিহিত করছেন।
গত শরতে মুজম্যাচের মার্কেটিং টিম তাদের এই ক্যাম্পেইনের কথা জানায় মালিককে। এর আগেও কয়েকবার তাকে এই অ্যাপের প্রমোশনাল ভিডিও আর বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল।
তবে এই ক্যাম্পেইনের নতুন বিজ্ঞাপনটিকে তিনি মিথ্যা বলে স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, "এই পরিকল্পনাটি আমার কাছে উপস্থাপন করা হলে একে বাস্তবসম্মত বলে মনে হয়। আর আমি সত্যিই পাত্রী খুঁজছি। আমি একটু ঠোঁটকাটা স্বভাবের। আবার স্ট্যান্ডআপ কমেডিও করি। তাই বিষয়টি সেভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে।"
মুজম্যাচের চিফ এক্সিকিউটিভ, শাহজাদ ইউনুস বলেন, "এরেঞ্জড ম্যারেজের প্রতি কোনো বিদ্বেষ নেই মালিকের। অনেক মানুষের জন্যই এটি একটি আদর্শ ব্যবস্থা। মুজম্যাচ কীভাবে মুসলিমদের বিশ্বাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদের মনমতো জীবনসঙ্গী খুঁজে পেতে সাহায্য করছে- তা তুলে ধরাই এই পুরো ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দ্যেশ্য।"
লন্ডনে বাবা-মায়ের সাথে বসবাস করা মালিক নিজেকে সনাতনি চিন্তার রক্ষণশীল মুসলিম বলে দাবি করেন। সঙ্গীর সাথে দেখা করতে গেলেও অন্য বন্ধুদের সাথে নিয়ে যান। বিয়ের উদ্দেশ্যেই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চান তিনি।
মুজম্যাচ এপের মার্কেটিং টিমের এক কর্মী মালিককে হাজার হাজার বার্তা থেকে বাছাই করতে সহযোগিতা করছেন। মালিক নিজে শ'খানেক বার্তার উত্তর পাঠিয়েছেন বলে জানান।
তবে এদের মধ্যে থেকে স্ত্রী খুঁজে না পেলেও; মালিক নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন। "এক দশকও যদি আমি একা থাকি তাও খুশি থাকব, কিন্তু অন্য কাউকে পেলে আরো বেশি খুশি হব," বলেন তিনি।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান