ডায়াবেটিস প্রতিরোধে একজন বাংলাদেশি ডাক্তারের আলোড়ন সৃষ্টি করা থিয়োরি
ছোটবেলা থেকেই বইয়ের পোকা ছিলেন মধু সূদন মালো। খেলার মাঠে গিয়েও বন্ধুরা যখন খেলাধুলায় মশগুল থাকত, তখন তিনি বই পড়তেন।
সূয়াপুর নান্না উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরির বইগুলো ছিল তার রত্ন। অষ্টম শ্রেণি শেষ করার আগেই তিনি প্রায় ৫০০ বই পড়ে শেষ করে ফেলেন।
এরপর একদিন তার হাতে আসে জর্জ ওয়াশিংটন কার্ভারের একটি বই। ১৯২০-এর দশকের এই প্রখ্যাত কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান বিজ্ঞানী তুলার বিকল্প ফসল ও মাটির ক্ষয়রোধের পদ্ধতির প্রসার ঘটান।
মধুর জীবনে সম্ভবত এটিই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই।
বইটি পড়ে তরুণ মধু ভাবেন, 'কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের একজন মানুষ যদি বিজ্ঞানী হতে পারেন, আমি কেন পারব না?'
এই ভাবনা থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের প্রান্তিক মালো সম্প্রদায় থেকে উঠে আসে এক উদীয়মান বিজ্ঞানীর প্রারম্ভিক যাত্রা।
এ বছরের ২৩ মার্চ গোটা বিশ্ব জানতে পারে, বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া বিজ্ঞানী মধু এস মালোর নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল ডায়াবেটিসের—যে রোগে বিশ্বের ১০ শতাংশ জনসংখ্যা ভোগে—নতুন কারণ আবিষ্কার করেছে। তারা জানান, ডায়াবেটিসের একটি অন্যতম কারণ হলো আইএপি (ইন্টেস্টিনাইল অ্যালকেলাইন ফসফেটাস) কমে যাওয়া।
সম্প্রতি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. মধু বলেন, 'ডায়াবেটিস একটি বৈশ্বিক মহামারি। চিকিৎসক হিসেবে আমি ডায়াবেটিসের মূল কারণগুলো জানতে আগ্রহী ছিলাম।'
বাংলাদেশে প্রতি বছর ডায়াবেটিস চিকিৎসায় প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয় জানিয়ে তিনি বলেন, মাত্র ৬০০ কোটি টাকা খরচ করে মানুষের আইএপি ঘাটতি নির্ণয় করা সম্ভব।
কাজেই প্রাথমিক পর্যায়েই আইএপি কাউন্ট বের করতে পারলে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করা যেতে পারে।
নতুন আবিষ্কার
২০১৩ সাল। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলে ফ্যাকাল্টি হিসেবে কাজ করছিলেন মধু। ওই বছরই একটি ফরাসি দল দেখায় যে লিপোপলিস্যাকারাইডস (এলপিএস)—গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ায় প্রাপ্ত টক্সিন—রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করলে তা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের কারণ হয়।
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হলো হাইপারগ্লাইসেমিয়া, মানুষের জন্য যা ডায়াবেটিস।
ওই সময় মধু আইএপি বিশ্লেষণ করছিলেন। আইএপি হলো ডিউডেনাম থেকে নিঃসৃত এনজাইম। এনজাইমের কাজ টক্সিন এলপিএসকে ধ্বংস করা।
ওই সময়ই মধু তার তত্ত্ব দাঁড় করান।
পরীক্ষাগার জন্মানো কিছু ইঁদুর নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন তিনি। ইঁদুরগুলোর কোনো আইএপি জিন ছিল না।
তত্ত্ব অনুসারে, এলপিএস ধ্বংস করার ক্ষমতা ছিল না ইঁদুরের।
ইঁদুরের অবস্থা পরীক্ষা করার জন্য কানাকারাজু কালিয়ানান নামে একজন পোস্ট-ডক্টরাল প্রার্থীকে ডাকেন মধু।
কালিয়ানান দেখেন, ইঁদুরগুলো ডায়াবেটিসে তো আক্রান্ত হয়েছেই, সেইসঙ্গে হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া ও হাইপারট্রিগ্লিসারাইডেমিয়াতেও (ফ্যাটি লিভার) আক্রান্ত হয়েছে, যা হৃদরোগের লক্ষণ।
এ পরিস্থিতিকে বিজ্ঞানীরা মেটাবলিক সিনড্রোম বলেন।
মধু বলেন, 'ওই সময় আমরা প্রমাণ করি যে আইএপি ঘাটতি মেটাবলিক সিনড্রোমের জন্য দায়ী। এটা ২০১৩ সালের প্রথম দিকের কথা। ডায়াবেটিস আর হৃৎপিণ্ডের সমস্যার সম্মিলনই মেটাবলিক সিনড্রোম।'
পরে তিনি হার্ভার্ড ছেড়ে মানব-সংক্রান্ত গবেষণা শুরু করেন। তিনি জানতেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক কম খরচে গবেষণা পরিচালনা করা যাবে।
ওই সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মধু বলেন, 'আমি ভাবলাম বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের উপর যেকোনো গবেষণা ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যৌথভাবে করা উচিত। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খানের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে সবুজ সংকেত দিলেন।'
বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গবেষণা দল গঠন
মধুর পাওয়া ফলাফল ও তত্ত্ব যেহেতু প্রাণীর ওপর গবেষণা থেকে পাওয়া, তাই দলটি সাভারে হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করে।
প্রথমে গড়পড়তা আইএপি থাকা ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাদের কারও কারও আইএপি কাউন্ট ৬৫ ইউনিটের কম ছিল, কারও ছিল এরচেয়ে বেশি।
মধু জানান, 'পাঁচ বছর পর আমরা দেখলাম যাদের স্থির আইএপি সবচেয়ে কম ছিল, তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ছিল সবচেয়ে বেশি। আর যাদের সর্বোচ্চ আইএপি আছে তাদের ডায়াবেটিস ন্যূনতম মাত্রায় ছিল।'
তিনি জানান, সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, কম আইএপি থাকা কিছু লোকের আইএপি বাড়ার পর তাদের ডায়াবেটিস হয়নি।
তবে আইএপি লেভেল কীভাবে বেড়েছে, তা তিনি জানতে পারেননি।
মধু বলেন, 'আরও গবেষণা করতে হতে পারে। ওই ব্যক্তির আর্থ-সামাজিক অবস্থা, খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়ামের ধরনসহ অন্যান্য বিষয়ে জানতে হবে আমাদের। কিন্তু সেই গবেষণার জন্য বিশাল বাজেটের প্রয়োজন।'
গবেষণায় আরও অংশ নিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজিস্ট অধ্যাপক ফারুক পাঠান, বিএসএমএমইউ-এর অধ্যাপক এমএ হাসনাত, ইউজিসি অধ্যাপক ও হেপাটোলজিস্ট সালিমুর রহমান, জন হপকিন্সের অধ্যাপক আবদুল্লাহ এইচ বাকী, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আবদুল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সালেকুল ইসলাম, বায়োস্ট্যাটিস্টিয়ান জাহাঙ্গীর আলম, জগন্নাথ মালো, মো. মেহেদী হাসান, গিনক বর্মন, শামিমা আক্তার, স্বপন কে বর্মন, তাপস সরকার ও নাঈমুল ইসলাম খান।
উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া মানবসেবার দর্শন
মধু এস মালোর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর। তার মধ্যে সবসময়ই সমাজসেবা করার তাড়না ছিল। মধুকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেন তার বাবা তারাশংকর মালো।
তার বাবা অন্যদের চেয়ে আলাদা ছিলেন বলে জানান মধু।
মালো সম্প্রদায়—এবং নিজ এলাকার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ১৯৪৭ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন তারাশংকর। এরপর তিনি কলকাতায় চলে যান। সেখানে মাসিক ২৪০ টাকা বেতনে একটি চাকরিতে যোগ দেন। ওই সময় এ ছিল বিশাল অঙ্কের টাকা।
কিন্তু তারাশংকর ওই চাকরি ছেড়ে দেন। কেন? সে সময় তারাশংকরের পিতামহ দুর্গাচরণ মালো সূয়াপুরের পাশের গ্রাম বেতুয়াইলে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক ছিল না। তারাশংকর কলকাতা থেকে ফিরে ওই স্কুলের দায়িত্ব নেন। স্কুলের চাকরিতে তার বেতন ছিল মাত্র ২০ টাকা।
'আমার বাবা এমন দর্শনের মানুষ ছিলেন। সম্ভবত উত্তরাধিকারসূত্রে এই দর্শনের খানিকটা আমি পেয়েছি,' মধু বলেন।
তারাশংকর সূয়াপুর নান্না উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তার সহকর্মীরাও মেধাবী মধুকে ভালোবাসতেন। প্রায়ই তারা মধুকে মিষ্টি কেনার জন্য টাকা দিতেন।
মধু বলেন, 'আমাকে বই পড়তে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিতেন আমার বাবা আর শিক্ষকেরা। আমার ওপর দারুণ প্রভাব ফেলেন তারা।'
মধুর মা প্রেমদা ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী নারী। খুব যত্নে তিনি ছয় সন্তানকে বড় করেছেন।
প্রেমদার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা খুব বেশি না এগোলেও সন্তানদের তিনি সবসময় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে অনুপ্রাণিত করতেন। সন্তানেরাও মাকে হতাশ করেননি।
চেয়েছিলেন পদার্থবিদ হবেন, হলেন আণবিক-জীববিজ্ঞানী
সূয়াপুর স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ না থাকায় উপবৃত্তি নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলার সিংড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন মধু।
বিজ্ঞানপ্রেমী মধু ১৯৬৮ সালে ঢাকা বোর্ডের ম্যাট্রিকুলেশনে পদার্থবিদ্যায় সর্বোচ্চ নম্বর পান।
তিনি জানান, 'আমি পদার্থবিজ্ঞানে ভালো। চেয়েওছিলাম যে পদার্থবিদ হব। কিন্তু আমার পরিবারের সদস্যরা বলল, পদার্থবিজ্ঞানে পড়ে ভালো চাকরি পাব না। তাছাড়া তারা আমাকে চিকিৎসক হওয়ার জন্য জোরাজুরি করছিল।'
১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এমবিবিএস শেষ করার পর আরও কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে ইরাকে যান চাকরি নিয়ে।
বসরায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে মধুকে পদায়ন করা হয়। চাকরি তিনি মন দিয়েই করছিলেন, কিন্তু বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছা তার মন থেকে মুছে যায়নি। উচ্চশিক্ষার উপায় খুঁজতে থাকেন তিনি।
ইরাকে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই তিনি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ইংল্যান্ডের ইংরেজিভাষী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের কাছে চিঠি লিখতে থাকেন।
বাগদাদ থেকে দুই রিম কাগজ কেনেন মধু। প্রতিদিন রোগী দেখা শেষ করে ১০-১২টি চিঠি লিখতেন। টাইপরাইটার ব্যবহার করার অনুমতি ছিল না। তাই তাকে হাতেই চিঠি লিখতে হতো।
একসময় তিনি অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পেডিয়াট্রিকসে পিএইচডি করার সুযোগ পান। বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বার্ষিক ৬৪ হাজার ডলার বেতনের প্রস্তাব দেয়।
মোনাশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন মধু।
তিনি জানান, 'তখন ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলছিল। সে সময় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং একেবারেই প্রারম্ভিক পর্যায়ে ছিল। এ ব্যাপারে আমার খুব আগ্রহ ছিল। এই বিষয়ক নানা বই পড়তাম আমি। আণবিক জীববিজ্ঞানের উপর বিবিসি রেডিওতে পাঁচটি লেকচার শুনলাম। এ লেকচার শুনে আমি রীতিমতো পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। ওই সময়ই আমি সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আণবিক জীববিজ্ঞানে পিএইচডি করার প্রস্তাব পাই। ওখানে নিজের টাকায় পড়তে হবে—তবু আমি মোনাশের বদলে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়কেই বেছে নিই।'
নিজের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে মধু দু-বছর পিএইচডি প্রোগ্রামের পড়াশোনা চালান।
একদিন মধুর বিভাগের প্রধান ফিলিপ কুচেল তাকে বললেন, 'মধু, মোট আটটা স্কলারশিপ আছে। তুমি ষষ্ঠ অবস্থানে আছ, তাই তুমিও একটা স্কলারশিপ পাবে।'
সেটা ছিল প্রাথমিক বাছাই। কিন্তু পরে চূড়ান্ত বাছাইয়ে অস্ট্রেলিয়ান না হওয়ায় মধুর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে।
মধু জানান, 'ফিলিপ ভিসির কাছে গিয়ে আমাকে স্কলারশিপ দিতে রাজি করান। এরপর আমি সফলভাবে পিএইচডি সম্পন্ন করি।'
অম্ল-মধুর পারিবারিক জীবন
সিডনি ইউনিভার্সিটি মধুকে ১৫ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার মূল্যের একটি বৃত্তি দেয়। এ উপলক্ষে বন্ধুরা মধুর কাছে বড়সড় পার্টির আবদার করেন।
সিডনিতে একজন বাংলাদেশি ভদ্রমহিলা মধুর অ্যাপার্টমেন্টের উপরতলায় ভাড়া থাকতেন। তিনিও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট-ডক্টরাল প্রার্থী ছিলেন। তার ফ্ল্যাটমেট ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান মেয়ে জুডিথ।
পার্টিতে মধু তার উপরতলার প্রতিবেশীদেরও দাওয়াত দেন। সেই পার্টিতে আনুষ্ঠানিক পরিচয় হয় বাংলাদেশি যুবক ও অস্ট্রেলিয়ান তরুণীর।
এরপর ভালোবাসা দিবসে জুডিথকে ডেটে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান মধু। রাজি হয়ে যান জুডিথ। দুজনে প্রেমে পড়েন। প্রেমের পরিণতি গড়ায় বিয়েতে, ১৯৮৬ সালে।
মধু পিএইচডি শেষ করেন ১৯৮৮ সালে। পরের বছর জন্ম হয় তাদের মেয়ে প্রেমোদার।
১৯৯০ সালে মধু তার পোস্ট-ডক্টরাল ডিগ্রির জন্য ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অভ টেকনোলজিতে (এমআইটি) যান।
১৯৯৯ সালে মধু-জুডিথ দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ততদিনে তাদের দ্বিতীয় মেয়ে নন্দিতার জন্ম হয়েছে। ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলেও জুডিথ আর মধু এখনও বন্ধু আছেন।
জুডিথ এখন মেয়েদের নিয়ে সিডনিতে থাকেন। প্রেমোদা আইন নিয়ে পড়াশোনা করছেন, আর নন্দিতা সিডনিতে মেরিন বায়োলজিতে পোস্ট-ডক্টরাল করছেন।
২০১৩ সালে কবিতাকে বিয়ে করেন মধু। এ ঘরে তাদের দুই সন্তান রয়েছে—কেশব ও দেবিকা।
এরপর কী?
মধু আর তার দলের গবেষণায় জানা গেছে, ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ আইএপির ঘাটতি। আর কারা আইএপি ঘাটতিতে ভুগছেন, তা শনাক্ত করা সহজ।
পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে সময় লাগবে মাত্র তিন মিনিট।
সারা বাংলাদেশে আইএপি ঘাটতিতে ভোগা রোগীদের একদিনেই শনাক্ত করা সম্ভব বলে জানান মধু।
তিনি বলেন, 'তা করা গেলে কোন ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, মানুষকে সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারব আমরা। আমার বিশ্বাস, আইএপি ঘাটতি প্রতিরোধযোগ্য রোগ।'
তবে বাংলাদেশ সরকার এই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার নিয়ে কিছু করার পরিকল্পনা করছে কি না, তা এই বিজ্ঞানী জানেন না।
মধু বলেন, 'তারা এই আবিষ্কার সম্পর্কে জানে। আমরা এটা বোঝানোর চেষ্টা করছি। দেখা যাক কী হয়।'