মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানো নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করে অবিলম্বে এই ধরনের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে লন্ডন থেকে মুঠোফোনে গণমাধ্যমের কাছে দলের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এসময় তিনি বলেন, 'ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সম্পর্কে যে উক্তি করেছেন, সে বিষয়ে আমি বক্তব্য না রেখে পারছি না। তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর যে উক্তি করেছেন…তা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং আমরা মনে করি এই বক্তব্যের মধ্যদিয়ে দেশটির নেতৃবর্গের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা হলেও প্রকাশিত হয়েছে।'
ফখরুল বলেন, 'আমি মনে করি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত। এই ধরনের কোনো চিন্তাও তাদের করা উচিত হবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে এবং সম্প্রতি একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তারা গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছে….এদেশের মানুষ যেকোনো মূল্যে এই ধরনের চক্রান্তকে রুখে দাঁড়াবে।'
প্রসঙ্গত, সোমবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
এনডিটিভি লিখেছে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-এর তিনজন পুরোহিত গ্রেপ্তার হওয়ার খবরের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এমন দাবি তুললেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন হওয়া বা বিপন্ন হওয়ার যে অলীক কাহিনি ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে; তা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
তিনি বলেন, 'আমরা বার বার বলেছি, এখানে পশ্চিম বাংলা ও ভারতের অনেক নামকরা সাংবাদিক এসেছিলেন, তারাও দেখেছেন বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো পরিস্থিতি নেই। অথচ ভারতবর্ষের মিডিয়া ও তাদের নেতৃবর্গ যেভাবে সম্পূর্ণ একটা মিথ্যাকে প্রচার করছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দিচ্ছেন; তা কোনোমতেই বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'অতি সম্প্রতি ইসকনকে নিয়ে এখানে (বাংলাদেশে) নতুন করে যে চক্রান্ত শুরু হয়েছে, তা বাংলাদেশের মানুষ কখনই গ্রহণ করবে না।'
তিনি বলেন, 'এটা খুব পরিষ্কার যে, ইসকনের সাম্প্রতিক ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক, রহস্যজনক এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি স্বরূপ।'