লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মা ছিলেন ক্রীতদাস, বলছে নতুন গবেষণা
রেনেসাঁর অন্যতম পুরোধা লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ছিলেন ককেশাস অঞ্চলের এক ক্রীতদাসের সন্তান। ইটালিয়ান ইতিহাসবিদ কার্লো ভেচে-র নতুন বই 'দ্য স্মাইল অভ কাতেরিনা, দ্য মাদার অভ লিওনার্দো' থেকে এ তথ্য জানা গেছে। খবর এল পাইস-এর।
নতুন এ তথ্য দা ভিঞ্চিকে নিয়ে গবেষণার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
নতুন বইটিতে দাবি করা হয়েছে, রিপাবলিক অভ ফ্লোরেন্সের এক ধনী নোটারির বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের সন্তান লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। তার মা কাতেরিনাকে অল্প বয়সে ককেশাস পর্বতমালা থেকে অপহরণ করে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
বইটির তথ্যানুসারে, কাতেরিনা তার নতুন দেশের ভাষা বলতে বা লিখতে পারতেন না। কারেতিনা সের পিয়েরোকে তার মালিক মোনা জিনার্ভা মুক্তি দিয়েছিলেন।
ভেচে বলেন, কাতেরিনাকে ফ্লোরেন্সের এক অভিজাত পুরুষের কাছ থেকে কিনেছিলেন জিনার্ভা। ফ্লোরেন্সের স্টেট আর্কাইভসে পাওয়া নথির তথ্য অনুসারে, ১৪৫২ সালের ২ নভেম্বর কাতেরিনাকে কেনেন তিনি। এর ছয় মাস আগে দা ভিঞ্চির জন্ম। ভেচে জানান, ওই নথির হাতের লেখা পিয়েরো দা ভিঞ্চি, অর্থাৎ লিওনার্দো দা ভিঞ্চির বাবার।
'দ্য স্মাইল অভ কাতেরিনা, দ্য মাদার অভ লিওনার্দো'তে ভেচে দাবি করেছেন, কাতেরিনা ছিলেন ককেশাসের সিরকাশিয়ান গোত্রের জ্যাকব নামের এক যুবরাজের মেয়ে। এক জুলাইয়ের সকালে একদল তাতার কাতেরিনাকে অপহরণ করে ইটালিতে পাচার করে দেয়। কাতেরিনা তখন শিশু।
ভেচে বলেন, মধ্যযুগের ইটালিয়ান প্রজাতন্ত্রগুলোতেও দাসপ্রথা চালু ছিল। ভেনেশীয় ও জেনোস সওদাগররা দাস বেচাকেনার ব্যবসা করত। ফ্লোরেন্সে অল্পবয়সি মেয়েদের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তাদের দিয়ে জোর করে নার্সে, কেয়ারটেকার, উপপত্নী ও যৌনদাসীর কাজ করানো হতো।
ভেচের দাবি অনুসারে, কাতেরিনাকে মোনা জিনার্ভার স্বামী দোনাতো ডি ফিলিপ্পো ডি সালভেস্ত্রক নাটি কিনে নেন।
ভেচে এএফপিকে বলেন, ফ্লোরেন্সে পৌঁছানোর আগে ভেনিসে তরুণ নোটারি পিয়েরো দা ভিঞ্চির সঙ্গে পরিচয় হয়। তাদের দুজনের সন্তানের নাম রাখা হয় লিওনার্দো।
ভেচে আরও বলেন, দা ভিঞ্চির জন্ম নথিভুক্ত করার ঘটনা থেকে প্রমাণ মেলে যে তার বাবা ক্রীতদাসী হওয়া সত্ত্বেও কাতেরিনাকে ভালোবাসতেন। কাতেরিনাকে দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে ধারণা ছিল, পিয়েরো দা ভিঞ্চি এবং কাতেরিনা নামেরই এক কিষাণির বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তান হলেন লিওনার্দো।