ইমরানের দল পিটিআই’র নিষিদ্ধ তহবিলে অবদান রেখেছে কারা?
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে টানা সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা মামলার রায় হয়েছে মঙ্গলবার (২ আগস্ট)। রায়ে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) বলেছে, পিটিআই প্রকৃতপক্ষে নিষিদ্ধ উৎস থেকে তহবিল গ্রহণ করেছে।
ইসিপি'র রায়ে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের আইন লঙ্ঘন করে পিটিআই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি সীমিত দায় কোম্পানি বা এলএলসি'র মাধ্যমে ৩৫১টি বিদেশি কোম্পানি এবং ৩৪ জন বিদেশি নাগরিকের কাছ থেকে 'সজ্ঞানে অনুদান গ্রহণ করেছে'। এছাড়া কানাডা, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশের নিষিদ্ধ উৎস থেকেও তারা অর্থ পেয়েছে। পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এসব তথ্য।
এমনকি, ইসিপি'র রায়ে নিষিদ্ধ তহবিলের উৎসগুলোর একটি তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে।
রায় অনুসারে, পিটিআই মার্চ ২০১৩ থেকে এপ্রিল ২০১৩ এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার একটি এলএলসি'র মাধ্যমে মোট ৫ লাখ ৪৯ হাজার মার্কিন ডলার পেয়েছে। এরমধ্যে, ৭০ হাজার ৯৬০ মার্কিন ডলার এসেছে বিদেশি নাগরিক ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে অনুদান হিসেবে। পাকিস্তানের আইনে এই তহবিল বা অনুদান গ্রহণ নিষিদ্ধ ছিল।
এই এলএলসি'র মাধ্যমে ২১ জন বিদেশি নাগরিক পিটিআইকে ১৬ হাজার ২০৫ মার্কিন ডলার দিয়েছেন এবং ১২০টি বিদেশি কোম্পানি পার্টিকে দিয়েছে ৫৪ হাজার ৭৫৫ মার্কিন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আরেক এলএলসি থেকে পিটিআই অনুদান পেয়েছে ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। এই অনুদানের সঙ্গে জড়িত ১৩ জন বিদেশি নাগরিক এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ২৩১টি কোম্পানি।
এছাড়া, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে কানাডাভিত্তিক কোম্পানি, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ কানাডা কর্পোরেশন বিভিন্ন পিটিআই অ্যাকাউন্টে বড় অঙ্কের অর্থ স্থানান্তর করেছে বলেও তথ্য রয়েছে ইসিপি'র কাছে। এসব অর্থের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চাপ দেওয়ার পরেও পিটিআই তা প্রকাশ করেনি বলে উল্লেখ করা হয় ইসিপি'র রায়ে।
ইসিপি আরও জানায়, ইংল্যান্ডভিত্তিক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি পিটিআই ইউকে-এর মাধ্যমেও আইন লঙ্ঘন করে তহবিল নিয়েছে পিটিআই। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডভিত্তিক ওই কোম্পানির মাধ্যমে পিটিআই মোট ৭ লাখ ৯২ হাজার ২৬৫ ডলার পেয়েছে।
এর পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের অবৈধ উৎস থেকেও পিটিআই তহবিল পেয়েছে বলে জানায় ইসিপি। রায়ে বলা হয়, নাসের আজিজ এবং রোমিতা শেঠি নামে দুই ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে পিটিআই-এর অ্যাকাউন্টে ২৭ হাজার ৫০০ ডলার স্থানান্তর করে।
জানা যায়, তাদের মধ্যে আজিজ পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এবং রোমিতা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ভিত্তিক একজন ব্যবসায়ী নারী। ইসিপি বলেছে, তারা উভয়েই পিটিআই-তে যৌথ অবদান রেখেছিলেন।
এছাড়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক আরিফ নকভির উটন ক্রিকেট লিমিটেড থেকে ২১ লাখ ৫১ হাজার, দুবাই-ভিত্তিক ব্রিস্টল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ৪৯ হাজার ৯৬৫, অস্ট্রেলিয়ার ডুপনেক পার্টি লিমিটেড এবং অন্যান্য কোম্পানি থেকে ৫ লাখ ৪ হাজার ২৫০ মার্কিন ডলার অনুদান গ্রহণ করেছে পিটিআই। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আনোয়ার ব্রাদার্স, জেইন কটন প্রাইভেট লিমিটেড এবং মেসার্স ইয়াং স্পোর্টসও অন্তর্ভুক্ত ছিল।