ভেসপা ডাক্তার
মেসি যেদিন বিশ্বকাপ জিতলেন সেদিনকার দুপুরের কথা। পুরো তল্লাটে সাজ সাজ রব তবে বাদশা ভাইয়ের মাথায় ঘুরছিল কক্সবাজার। ২১ ডিসেম্বর (আজ) কম করেও ষাটটি ভেসপা যাত্রা করবে দোয়েল চত্বর থেকে, চট্টগ্রামে একদিনের যাত্রাবিরতি করে কক্সবাজার গিয়ে থামবে। প্রস্তুতি পর্বে ভেসপাগুলোর শরীর-স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রয়োজনে ঠিকঠাক করে দেওয়ার দায়িত্ব স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিয়েছেন সিদ্দিকবাজারের বাদশা।
'বাংলাদেশ ভেসপা কমিউনিটি' দারুণ সক্রিয় এক সংগঠন। গেল ৮ আগস্ট নবাবী রাইডের আয়োজন করেছিল আর তাতে অর্ধশত লুঙ্গি-পাঞ্জাবী পরা চালক নিজ নিজ ভেসপা নিয়ে অংশ নিয়েছিল।
ভেসপার উৎপাদন প্রায় বন্ধ এখন, নতুন করে আমদানিও হয় না। তাই 'ভিনটেজ কার' হিসেবে এর আদর বাড়ছে। যাদের আছে তারা বাহনটির যত্ন নিচ্ছেন বেশি করে আর যাদের নেই তারা আগ্রহী হচ্ছেন একটি অন্তত সংগ্রহ করার। আর এ কাজে ভেসপা প্রেমীদের ভরসার নাম 'বাদশা ভাই'।
ইতালিতে বাহনটির জন্ম ১৯৪৬ সালে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রায় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পুজো যুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনীর জন্য জঙ্গিবিমান তৈরির কাজে নিয়োজিত ছিল। বিশ্বযুদ্ধে ইতালি হেরে যাওয়ার কারণে দেশটির ওপর বিমান তৈরিতে বিশেষ নিষেধাজ্ঞা দেয় মিত্রবাহিনী। পুজো তখন গাড়ি তৈরিতে হাত দেয়। এদিকে যুদ্ধে ইতালির রাস্তাঘাটেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল প্রবল। তাই এমন একটি স্কুটারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল যেটি খারাপ রাস্তায়ও তাল রেখে চলতে পারে আর রাস্তার ধুলোবালি থেকে রেহাই দেয় যাত্রীদের। স্কার্ট পরে নারীরাও যেন বাহনটি চালাতে পারে সে দিকেও খেয়াল রেখেছিল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। সেসঙ্গে বাইরের প্রণোদনা হিসাবে কাজ করল জ্বালানী তেলের ঊর্ধ্বগতি, গাড়ি রাখার জায়গার অভাব ইত্যাদি। ফলাফলে প্রতিবছরই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকল এর বিক্রির হার। আর ১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'রোমান হলিডে' ছবিতে অড্রে হেপবার্ন ও গ্রেগরি পেককে ভেসপায় চড়তে দেখে ভেসপা বিক্রি হতে থাকল লাখে লাখে। শেষে এটি পরিণত হলো পপ আইকনে। তখন ব্রিটেনের আইকন ম্যাগাজিন বলল, 'ভেসপা কেবল বাহন নয়, লাইফস্টাইলও'।
জেন্টেলম্যান থেকে পাবলিক, ভেসপা সবার
বাদশা ভাইও বলছিলেন, 'ভেসপা হলো স্কুটারের রাজা। খুব বুদ্ধি করে এটি তৈরি করা হয়েছে। স্যুট-টাই পরে, কাবলি পরে, শাড়ি পরে, পায়জামা-পাঞ্জাবী পরে মানে সব রকম পোশাক পরেই এটি চালানো যাবে। মানে এটি জেন্টলম্যান এবং পাবলিক (সাধারণ মানুষ), সবারই বাহন। ভেসপায় ব্যবহার করা হয়েছে অ্যারোডাইনামিকস। শক অ্যাবজরভার থাকায় এতে ঝাকি লাগে কম। এছাড়া পুরো গাড়িটাই মাউন্ট করা। সেসঙ্গে স্পেয়ার রাখার যে জায়গা সেটি বেশ বড় হওয়ার কারণে এতে অনেক কিছুই বহন করা যায়। সারাদেশে এখন ভেসপা আছে ৫ হাজারের মতো। ঢাকার পরে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি যশোরে, তৃতীয় স্থানে আছে চট্টগ্রাম, চতুর্থ রাজশাহী আর পঞ্চম স্থানে ময়মনসিংহ। যাত্রী পরিবহন ছাড়া মালও টানে ভেসপা। নগদ, বিকাশ আমলের আগে মার্কেটিংয়ের লোকেরা এতে টাকাও টানত। ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা কাপড়, বিস্কুটের মতো পণ্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পৌঁছাত এটি দিয়ে। আমি একবার কাপ্তানবাজারে একজনকে ডিম টানতেও দেখেছি। এখন একজনকে দেখি খাবার টানে । সত্যি এক ব্যতিক্রমী বাহন এই ভেসপা।'
বাদশা ভাই আরেকটি মজার ব্যাপার যোগ করলেন, 'ট্রাফিক পুলিশকে দেখবেন কখনো ভেসপা আটকায় না। একে তো গাড়িটার কাগজপত্রে ভেজাল থাকে না, তার ওপর রাজকীয়। ট্রাফিক পুলিশও ব্যাপারটি জানেন আর গাড়িটাকে ইজ্জত দেন।'
বাদশা ভাইয়ের পুরো নাম বাদশা মিয়া। তার দোকানের নাম এলবি ভেসপা। ভেসপা ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি এমনকি মোটরসাইকেলের কাজও করেন না। তার মেকানিক হওয়ার শুরুটা জানতে যেতে হবে '৮৮-'৮৯ সালে। তখন তার বয়স ৭-৮ বছর। চার ভাইবোনের মধ্যে বাদশা সবার ছোট। বাবা ছিলেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। পরিবারটি থাকত সিদ্দিকবাজারে। বাসা থেকে বের হলেই পাওয়া যেত একটি ওয়ার্কশপ। বাদশা স্কুলে যাওয়ার পথে ওয়ার্কশপের এক ধারে দাঁড়িয়ে কাজ দেখত। এমন তন্ময় হয়ে দেখত যে স্কুলের সময় পার হয়ে যেত। বাড়িতে এ নিয়ে অনেক চেঁচামেচি হয়েছে কিন্তু বাদশার মন লেগে গিয়েছিল ওয়ার্কশপে। শেষে ওয়ার্কশপের ওস্তাদ তমিজউদ্দিন বললেন, 'তোমাকে আমি কাজ শেখাব তবে শর্ত আছে, তোমাকে স্কুলে যেতে হবে ঠিক ঠিক।' বাদশা প্রস্তাব পেয়ে খুশি। স্কুল থেকে ফিরেই ড্রেস খুলে চলে যেত ওয়ার্কশপে। তখন অভিনেতা খলিলকে দেখেছেন। তিনি ভেসপা চালাতেন আর সেটায় সমস্যা দেখা দিলে তমিজউদ্দিন ওস্তাদের কাছে আসতেন। ভেসপা শব্দটি আর তা থেকে নির্গত ধোঁয়া যা মশার ওষুধের মতো, বাদশার ভালো লাগত।
বাদশা ভেসপা চেনেন হাতের তালুর মতো। এর হেড লাইট, টেইল লাইট, স্পিডোমিটার, এয়ার ক্লিনার, হ্যান্ডেল ক্লিনার, লক সেট, টুল বক্স, ফুট প্লেট সব তিনি চোখ বন্ধ করে খুলতে বা লাগাতে পারেন। বাদশা বলছিলেন, 'ভেসপা সারানোর কাজ আমি করি ভালোবেসে। আমার সঙ্গে ভেসপার প্রেম হয়ে গেছে। যতদিন ভেসপা থাকবে ততদিন অন্য কোনো গাড়িতে হাত দিব না। এজন্য আমার ইনকামও বেশি হয় না। একটা ভেসপা সারাতে যদি ১৫ হাজার টাকা লাগে, তবে তার চেয়ে বেশি আমি কারোর কাছ থেকে চাই না। একবার একজন একটা ভেসপা নিয়ে এলে, দেখে বললাম, পাঁচ হাজার টাকা লাগবে। পরে তিন হাজার টাকাতেই কাজ শেষ হয়ে গেলে তাকে দুই হাজার টাকা ফেরত দিয়েছিলাম। তিনি এতো বেশি অবাক হয়েছিলেন যে, এখন ঈদের দিনও আমাকে সপরিবারে দাওয়াত দেন। আমাকে ভালোবেসে ভেসপা প্রেমীরা নাম দিয়েছেন ভেসপার ডাক্তার।'
দোকান ভাড়া, মজুরি ও নিজের খরচ বাবদ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রতি মাসে লাগে বাদশা মিয়ার। এর মধ্যে দোকান ভাড়া ১৫ হাজার টাকা, সহকারী ইয়াসির আরাফাতকে দেন ১৫ হাজার টাকা আর বাকিটা নিজের সংসারের খরচ। তবে সব মাসে পঞ্চাশ হাজারও আয় করতে পারেন না বাদশা ভাই। অথচ কাজের শেষ নেই, একদিনও বসে থাকার সুযোগ পান না। প্রতিদিন সকাল ৭টায় শুরু হয় তার দিন, ছেলে বালাদকে স্কুলে দিয়ে এসে কাজে লাগেন আর টানা রাত নয়টা পর্যন্ত কাজ করেন।
কলে (কাস্টমারের বাড়িতে) যান সপ্তাহে দুই-তিন দিন। কখনো ইস্কাটন, কখনো মগবাজার, কখনোবা গুলশানে।
নওগাঁর এক ঘটনা
নওগাঁর এক ডাক্তার ফেসবুকে যোগাযোগ করেন বাদশা ভাইয়ের সঙ্গে। একটি ভেসপা তিনি কিনতে চান। বাদশা ভাই তখন নদীর ওপারের একজনের কথা জানতেন যিনি বিক্রি করতে চান পুরোনো একটি ভেসপা। কিন্তু সেটির অবস্থা এতোই নাজুক যে বাদশা ভাই বস্তায় ভরে তা দোকানে নিয়ে আসেন। ডাক্তারকে কথা দেন, এটিকে একেবারে ঝকঝকে করে তুলবেন যেন দেখলে নতুন মনে হয়। ডাক্তার সাহেব এক লাখ টাকা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেন বাদশা ভাইকে। বাদশা গাড়িটার মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত পুরোটা সাজিয়েছেন মনের মাধুরী মিশিয়ে। তারপর একদিন ডাক্তার সাহেবকে বললেন, কিভাবে গাড়িটা আপনার কাছে পাঠাব? ডাক্তার সাহেব এসএ পরিবহনে করে পাঠানোর পরামর্শ দিলেন। কিন্তু বাদশা ভাই ভাবলেন, চমকে দিবেন ডাক্তার সাহেবকে। মানুষটির সঙ্গে তার একবারও দেখা হয়নি। তিনি এক সকালে ভেসপাটি নিয়ে বের হলেন, ৩১১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চালিয়ে চলে যান নওগাঁ। ডাক্তার সাহেব তখন রোগী নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, কিন্তু বাদশা ভাইকে দেখে সোজা বুকে জড়িয়ে ধরলেন। পরে বাড়িতে খাওয়াদাওয়ার এলাহী বন্দোবস্ত করেছিলেন।
আরেকবার গুলশানে আফনান নামের এক ভেসপাপ্রেমীর একটি ভেসপা চালিয়ে পরীক্ষা করে দেখছিলেন। দূর থেকে জীপ গাড়ির এক আরোহী তার পিছু নিয়েছিলেন। তারপর কাছাকাছি এসে বাদশা ভাইকে ডেকে থামালেন। গাড়ি থেকে নেমে বললেন, 'ভাই এমন একটা ভেসপা আমার চাই। আপনি দয়া করে যোগাড় করে দেন।'
বাদশা ভাই লক্ষ্মীবাজারের একজনের কাছ থেকে একটা ভেসপা পান, সেটিকে পরিত্যক্তই বলা যায়। দাম দিয়েছিলেন ৪০ হাজার টাকা। তারপর গাড়িটিকে মনের সব মাধুরী মিশিয়ে একেবারে নতুনের মতো করে তোলেন। জিপ গাড়ির সেই আরোহী প্রয়োজনীয় সব কিছু যোগান দিয়েছিলেন। ইতালি থেকে ২ লাখ টাকার শুধু স্পেয়ার পার্টসই আনিয়েছিলেন। পরে ঝকঝকে নতুনের মতো গাড়িটা পেয়ে খুশিও হয়েছিলেন খুব। বাদশা বলছিলেন, 'সব কিছু টাকায় পাওয়া যায় না ভাই, মানুষের খুশি দেখলে প্রাণ ভরে যায়। জীবনে টাকা না পাই, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এটাই সুখ, আনন্দ।'
আরেকজনের গল্প বলেছিলেন বাদশা ভাই, তার নাম মাহমুদ নবী তুষার। তিনি কানাডায় থাকেন। ঢাকায় বাড়ি মিরপুরের পাইকপাড়ায়। তার ১৯৭০ মডেলের একটা ভেসপা আছে। ঢাকায় এলে বাদশা ভাইকে তিনি প্রতিবারই ডেকে পাঠান। তবে মজার ঘটনা ঘটে তিনি কানাডাতে থাকলেই। কানাডাতেও তার একটি ভেসপা আছে অথচ সেখানে ভেসপার মেকানিক নেই। তাই রাত দশটার পরে বাদশা ভাই ভিডিও ওয়ার্কশপ খোলেন তুষারের জন্য। বলতে থাকেন, 'তুষার ভাই টি গুটি (একটি সারাইযন্ত্র) নেন, ডানদিকের লকটা খোলেন, এবার প্লাস শক্ত করে ধরে মাথাটায় মোচড় দেন…'। ঘণ্টা-দেড়ঘণ্টা ধরে সে ওয়ার্কশপ চলে। ভিডিও চ্যাটেই তিনি গাড়ির সমস্যা মেটান। এভাবে গাড়ি সারানোর কাজ দারুণ উপভোগ করেন বাদশা ভাই।
প্রায় তিন হাজার ভেসপা এযাবৎকালে সারিয়েছেন বাদশা ভাই। সারা দেশের ভেসপাপ্রেমীদের কাছে তিনি পরিচিত। ফেসবুক পাতায় তার একটা জনপ্রিয় পোস্ট, "আপনার ওল্ড মডেল ভেসপা আছে, আপনি ভাবছেন এটাকে নতুন করাবেন, আপনার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান, এলবি ভেসপা ওয়ার্কশপ, আনবেন ভাঙ্গা, হবে চাঙ্গা।"
আরো কিছু পোস্ট
ফেসবুকে বাদশা ভাইয়ের যে পেইজ আছে তাতে ২৪ অক্টোবর একটি পোস্ট দিয়েছেন এমন, "গতকাল কাজ করার সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। সেকারণে ভুলে একটি নাট ঢিলা থেকে যায়। গ্রাহক ভেসপা নিয়ে বাসায় গিয়ে দেখতে পায় সকারের নাট ঢিলা, তখন আমাকে জানালে আমি ঝড়বৃষ্টির মধ্যে উত্তরা দিয়াবাড়িতে গিয়ে ঠিক করে দিয়ে আসি।"
২০২১ সালের নভেম্বরের ১১ তারিখে লিখেছেন, "ট্যুর শেষ করে ঢাকার পথে ফিরছে কমলা ভেসপা। ঢাকা, খাগড়াছড়ি, সাজেক, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, টেকনাফ বেড়িয়ে এলো ভেসপাটি।"
উল্লেখ্য, কমলা রঙের ভেসপাটি রেডি করার পর বাদশা ভাই ভাতিজা ইয়াসির আরাফাতকে পাঠিয়ে ছিলেন একে ঘুরিয়ে আনার জন্য। সেটা পাহাড় ও সমুদ্র বেড়িয়ে আসার পর ওই পোস্ট।
নভেম্বরের চার তারিখে তিনি একজন ভেসপাপ্রেমীর না ফেরার দেশে চলে যাওয়া নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন, "হাজী স্বপন একজন ভালো মানে মানুষ, ভেসপা চালক ও ভেসপা প্রেমিক। তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসীব করুন।"
আবার বাদশা ভাইকে ট্যাগ দিয়ে সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখে এহসানুল হক আবীর লিখেছেন, "আমি কখনো দুই চাকার বাহন চালাব কল্পনাও করিনি কিন্তু ছোটবেলার শখের কাছে নিরুপায় হয়েই দীর্ঘ অনেক বছর সাধনার পর সংগ্রহ করেছিলাম একটি পরিত্যক্ত ভেসপা যা নতুন করে সাজিয়েছেন এলবি ভেসপার বাদশা ভাই। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না, অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা আপনাকে।"
হাজী ইমরান হোসেন নামের একজন জুলাইয়ের ১৮ তারিখে লিখেছেন, "আমি মনে করি আমাদের পুরান ঢাকায় ভেসপার মিস্ত্রি বলতে তার মতো কেউ নেই, উনি অনেক অভিজ্ঞ। তিনি অনেক ভালো মনের মানুষ। আমি আর আমার বাবা অনেক বছর যাবত তার কাছে ভেসপা ঠিক করাই, ভেসপার কোনো সমস্যা থাকলে উনি সুন্দরভাবে, সঠিকভাবে ও সুষ্ঠুভাবে ঠিক করে দেন। তাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসা।"
কক্স কার্নিভাল
একশ ছাব্বিশ জন ভেসপাপ্রেমী নিবন্ধিত হয়েছেন কক্সবাজার কার্নিভালের জন্য। সকলে অবশ্য ভেসপা চালিয়ে কক্সবাজার যাবেন না, তবে ষাট জন চালিয়েই যাবেন বলে ধারণা বাদশা ভাইয়ের। ২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৭টায় দোয়েল চত্বর থেকে যাত্রা শুরু হয়ে ২৫ ডিসেম্বর হবে শেষ দিন। প্রথম ও শেষ রাত চট্টগ্রামে যাত্রা বিরতি হবে আর দুই রাত কক্সবাজারে থাকবেন ভেসপা চালকেরা। একারণে ব্যস্ততার শেষ নেই বাদশা ভাইয়ের। তিনি অংশগ্রহণকারীদের কাছে একটি চেকলিস্ট পাঠিয়েছেন যার মধ্যে আছে ব্রেক কেবল ইনসপেকশন, হ্যান্ডেলবার মুভমেন্ট চেক, ট্রান্সমিশন ইউনিট চেক, ব্যাটারি চেক, হেডলাইট অ্যাডজাস্টমেন্ট ইত্যাদি। যদি এগুলোর কোনোটিতে কারোর অসুবিধা থাকে তবে বাদশা ভাই বিনামূল্যে ঠিক করে দিচ্ছেন। তিনি ভাবছেন, ষাটটি ভেসপা এক সারিতে চললে দেখার মতো এক দৃশ্য তৈরি হবে চিটাগং রোডে।
বাদশা ভাইয়ের নিজের দুটি ভেসপা আছে। এর একটি ১৯৬৭ সালে তৈরি, অন্যটি ২০০০ সালে তৈরি। তিনি পছন্দ করেন বিরিয়ানী আর ভেসপাপ্রেমীদের বন্ধুত্ব। তার প্রিয় কবি জসীমউদ্দিন কারণ তিনি ভেসপা চালাতেন।