ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়ে আকসুকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটার
দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারে শুরু করা দলটি পরের ম্যাচেও কুলিয়ে উঠতে পারেনি, হেরেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। মানসিকভাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা শক্ত অবস্থানে নেই, সেটা বলাই বাহুল্য। এর শোরগোল পড়েছে গেলে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়া নিয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা বাংলাদেশ দলের এক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দলের বাইরে থাকা আরেক নারী ক্রিকেটার প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে (আকসু) ব্যাপারটি জানিয়েছেন বাংলাদেশের এই ক্রিকেটার। ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়া নিয়ে আকসুকে জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবির উইমেন উইংয়ের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
তিনি বলেন, 'সকালে যখন প্রস্তাবটা যায়, প্রস্তাবটা যাওয়ার পরে সে (যাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়) আমাদের ওখানকার কোচ এবং ম্যানেজারকে জানায়। ম্যানেজার এবং কোচ বোর্ডকে জানায়। বোর্ডের পক্ষ থেকে আইসিসিকে জানানো হয়। এখন আইসিসি তাদের তদন্তের মধ্যে রেখেছে। এখানে আমাদের করণীয় কিছু নেই। আকসু এই ঘটনাটা তদন্ত করবে। যেখানে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে, আমরা তা করব।'
প্রস্তাবের বিষয়টি ঠিক সময়ে জানিয়ে ক্রিকেটার দায়িত্বের পরিচয় দিয়েছে জানিয়ে বিসিবির এই পরিচালক আরও বলেন, 'আমাদের ক্রিকেটার কিন্তু দেশের সাথে প্রতারণা করেনি। সে ঘটনাটা জানিয়ে দিয়েছে। আমরা বোর্ডের মাধ্যমে সেটি আইসিসিকে জানিয়েছি। আমাদের খেলোয়াড় যেহেতু দায়িত্বশীল আচরণ করেছে, আমাদের খেলোয়াড়রা এ ব্যাপারে যথেষ্ট স্মার্ট। অবশ্যই এটার প্রশংসা করতে হবে। আশা করব সবাই সেটা করবে। এখন আমরা আরও বেশি সতর্ক হব।'
ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া ক্রিকেটার কিংবা প্রস্তাব পাওয়ার ক্রিকেটার; কারও নামই প্রকাশ করতে চায় না বিসিবি। তবে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জাতীয় দলের বাইরে থাকা সোহেলি আক্তার বিশ্বকাপ স্কোয়াডের এক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। ফিক্সিংয়ের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে সোহেলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'এটা নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। সময়ে হলে জানতে পারবেন।'
২০১৩ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় সোহেলি আক্তারের। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ১০ বছরের হলেও বেশিদিন খেলা হয়নি তার। ডানহাতি এই অফ ব্রেক বোলার জাতীয় দলের হয়ে ২টি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। অভিষেকের পরের বছরই দল থেকে বাদ পড়েন তিনি, এরপর আর ফেরা হচ্ছিল না। অবশেষে ২০২২ সালে ডাক পড়ে তার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ৮টি ম্যাচ খেলেন তিনি।
ম্যাচ ফিক্সিং, স্পট ফিক্সিং, দল বা ম্যাচের কোনো তথ্য ফাঁস করার প্রস্তাব পেলে নির্দিষ্ট ওই ক্রিকেটারকে তা আইসিসির দুর্নীতি বিভাগকে জানানোর বাধ্যবাধকতা আছে। প্রস্তাব পেয়ে তা গোপন করলে আইসিসি শাস্তির ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। তিনবার প্রস্তাব পেয়েও বিসিবি বা আইসিসিকে তা না জানানোর কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য সাকিব আল হাসানকে নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি।