চট্টগ্রাম-১০ উপনির্বাচন: ভোটার উপস্থিতি কম, সিসিটিভি ক্যামেরায় মনিটরিং করছে ইসি
রোববার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে চট্টগ্রাম-১০ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটকেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করছেন নির্বাচন কমিশনাররা। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। যদিও একাধিক ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি খুবই কম।
১৫৬টি কেন্দ্রের ১,২৫১টি বুথে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী, চট্টগ্রামের পাহাড়তলী কলেজ কেন্দ্রের ২,৯২০ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে।
এদিকে, নিউ টাইগার পাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে মাত্র ২৫০টি। এই কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ২,৩১৯।
সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬ ও ১৭ নম্বর কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সব বুথে নৌকার এজেন্ট থাকলেও নেই অন্যকোনো প্রার্থীর এজেন্ট।
১৬ নম্বর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জিএম আহসান হাবিব দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নৌকা ছাড়া আর কোনো প্রার্থীর এজন্ট আসেননি।"
ভোট শুরুর এক ঘন্টা পর ১৭ নম্বর কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন ২২ জন। এই কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ২,৬৮৯ জন। ১৬ নম্বর কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৫০ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রের ৩ নং বুথে ভোট পড়েছে মাত্র ২টি। ১৬ নম্বর কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ৩,১৬৬ জন।
মনছুরাবাদের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের এজেন্ট দেখা গেছে।
১১০ নম্বর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার শাহাদাত কবির দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রের ৩,৩৮২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৪২ জন।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। চট্টগ্রাম-১০ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৮ জন।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনের বিষয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, "আশা করছি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরায় ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।"
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি আরও বলেন , "আমরা সকাল ৯ টায় একবার ভোটের তথ্য সংগ্রহ করেছি। ভোটার উপস্থিতি কম হলেও কোনো রকম সমস্যা নেই।
বেলা ১২ টা ও বিকেল ৪ টায় আবারও প্রিসাইডিং অফিসাররা ভোটের তথ্য পাঠাবেন বলে জানান তিনি।
এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৬জন প্রার্থী। প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সামসুল আলম (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশীদ মিয়া (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন) ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট)।
এই উপনির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে না বিএনপি।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য সবগুলো কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৪০৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভোটগ্রহণে কাজ করছেন ৪ হাজার ১০৬ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা। ২ হাজার ১১০টি ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়া, নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সাথে দায়িত্ব পালনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আইনানুগ নির্দেশনা প্রদানের জন্য ৮জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
১৫৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ থেকে ১৭জন পুলিশ এবং আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। আর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্বে রয়েছেন ১৭ থেকে ১৮জন পুলিশ-আনসার সদস্য।
গত ২ জুন আওয়ামী লীগের আফসারুল আমীনের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম-১০ আসনটি শূন্য হয়।