প্রথমবারের মতো বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলার ছাড়িয়েছে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই অবিশ্বাস্য গতিতে বাড়ছে বিটকয়েনের দাম। এবার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল মুদ্রাটির দাম ১ লাখ ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে।
চলতি বছর বিটকয়েনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর ট্রাম্প নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর গত চার সপ্তাহেই দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ।
বিটকয়েন বিশ্বের বৃহত্তম ও সর্বাধিক স্বীকৃত ক্রিপ্টোকারেন্সি। ২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতো এটি তৈরি করেছিলেন। এটি হস্তান্তরযোগ্য মালিকানাসহ একটি বিকেন্দ্রীভূত ডিজিটাল মুদ্রা।
বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলারে ওঠার পেছনেও ট্রাম্পের একটি ঘোষণা অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বলে বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে। সেটা হলো, ওয়াল স্ট্রিটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক কমিশনার পল অ্যাটকিন্সের নাম ঘোষণা। এই ব্যক্তি ক্রিপ্টোকারেন্সি বান্ধব হিসেবে পরিচিত। এখন যিনি এসিইসির কমিশনার, সেই গ্যারি জেন্সলারের তুলনায় তিনি অধিকতর বিটকয়েক বান্ধব।
ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্পের আমলে বিটকয়েনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। বিভিন্ন সময় এই ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। এ কারণেই ভার্চুয়াল মুদ্রাটির দাম এত বাড়ছে। গত ৬ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফলাফল প্রকাশের দিনই বিটকয়েনের দাম প্রথমবারের মতো পৌঁছে যায় ৭৫ হাজার ডলারে।
যুক্তরাজ্যের এক জরিপে দেখা গেছে, এখন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, যেমন শিক্ষক, ব্যাংকার, নার্স ও আইটি পেশাদারেরা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে একসময় কারেন্সি যে শুধু প্রযুক্তি জগতের মানুষের বিনিয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে মনে করা হতো, সেই ধরাবাঁধা চিত্রটা পাল্টে গেছে। এই শ্রেণির মানুষেরা মনে করছেন, বিপুল পরিমাণে ব্যক্তিগত সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের সেরা মাধ্যম।
বিটকয়েনের এমন উল্কার গতিতে উত্থান সত্ত্বেও এক গভীর রহস্য অনুদ্ঘাটিত থেকে গেছে। সেটা হলো, এর প্রতিষ্ঠাতা রহস্যময় সাতোশি নাকামোটোর প্রকৃত পরিচয় এখনো কেউ জানেন না।
অনেক মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন, যদিও এখন পর্যন্ত কেউ সফল হতে পারেননি। গত অক্টোবরে এই রহস্য নিয়ে এইচবিও চ্যানেলে বড় পরিসরের তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়, যেখানে দাবি করা হয়, কানাডার বিটকয়েন বিশেষজ্ঞ পিটার টডই সম্ভবত সাতোশি নাকামোটো। কিন্তু সমস্যা সেই একটি, পিটার টড নিজেই এ দাবি অস্বীকার করেন এবং ক্রিপ্টো দুনিয়ার মানুষেরাও এইচবিওর এই দাবিতে গুরুত্ব দেয়নি।
২০২১ সালেও ডোনাল্ড ট্রাম্প বিটকয়েনকে একধরনের জালিয়াতি মনে করতেন। এরপর ট্রাম্পের মতি পাল্টেছে। এবারের নির্বাচনের অঙ্গীকারে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের ক্রিপ্টোকারেন্সির রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছেন।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান