হিন্দুদের ওপর হামলাকারীদের ধর্ম সম্পর্কে ধারণা নেই: ঢাবি শিক্ষক সমিতি
শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
আজ মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষক সমিতির সদস্য ও নেতৃবৃন্দরা।
'সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাঁড়াও, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ো'- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান মানববন্ধনে যোগ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. রহমতুল্লাহ বলেন, "যা কিছু ঘটছে এগুলো অশনিসংকেত। সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৫টি জেলায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। অথচ এখনও প্রশাসনিকভাবে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।"
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক বলেন, "গত বুধবার কুমিল্লায় একটি মন্দিরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কোরআন শরীফ রেখে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।"
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, "আমি কুমিল্লার একজন মানুষ হিসেবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, আমি লজ্জিত। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের ধর্ম সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই।"
"বিচারের নামে যেন কালক্ষেপণ না হয়। আমাদের বক্তব্য ও কর্ম একইভাবে চলতে থাকবে। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি পাঠাব," বলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বলেন, "কুমিল্লায় গ্রুপিংয়ের কারণে তৃতীয় পক্ষ ফায়দা নিয়েছে। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি পরিকল্পিত ঘটনা।"
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, "এ ধরনের আক্রমণ প্রথম নয়। ঘরে ঘরে এত ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ। তাহলে হামলার সময় তারা কোথায় ছিল? হামলাকারীরা কি দলে ভারী? নাকি তারা ওদের ভয় পায়? আমাদের শিক্ষক হিসেবে অনেক কিছু করার আছে।"
নোবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য ওহিদুজ্জামান চাঁন বলেন, "যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে সরকারের অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রাজনৈতিক, সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি এর সঠিক বিচার করতে হবে। এর জন্য আইন করতে হবে। এটি একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ।"
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ একটি নাটক মঞ্চস্থ করে।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। মিছিলটি অপরাজেয় বাংলা প্রদক্ষিণ করে।