আইন ভেঙে মাঠেই ধূমপান করলেন ঢাকার আফগান ক্রিকেটার শাহজাদ
অনেক কারণেই খেলোয়াড়রা অনুকরণীয়। এর মধ্যে অন্যতম শৃঙ্খলাবোধ। ফিটনেসের ব্যাপার জড়িত থাকায় মাদক জাতীয় জিনিস থেকে নিজেদের দূরে রাখার চেষ্টা থাকে প্রতিটি খেলার খেলোয়াড়দের। সেই খেলোয়াড়দেরই কেউ যখন মাঠের মধ্যে ধূমপান করেন, সেটা বড় ধরনের অপরাধের মধ্যেই পড়ে। ক্রিকেটের আইনের পরিপন্থী এমন এক কাজই করলেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দল মিনিস্টার ঢাকার ক্রিকেটার মোহাম্মদ শাহজাদ।
শুক্রবার আফগানিস্তানের এই ব্যাটসম্যান মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মাঝে দাঁড়িয়ে ধূমপান করেছেন। এ সময় শাহজাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার জাতীয় দলের দুই সতীর্থ করিম জানাত ও ফজল হক ফারুকী। করিম জানাত বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেললেও ফজল হক ফারুকী শাহজাদের সঙ্গে মিনিস্টার ঢাকায় আছেন।
বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। বিকেলের দিকে বৃষ্টি থামলে মিনিস্টার ঢাকা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচের জন্য মাঠ প্রস্তুত করা শুরু হয়। সোয়া ৬টায় দিকে মাঠে নামেন দুই দলের কয়েকজন ক্রিকেটার। দুই স্বদেশীর সঙ্গে তখন মাঠে যান শাহজাদও।
এ সময় মাঠে অনুশীলন নেটের পাশে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন তারা তিনজন। এক পর্যায়ে পকেট থেকে ইলেক্ট্রিক সিগারেট বের করে পান করতে শুরু করেন শাহজাদ। ব্যাপারটি শুরুতে মিনিস্টার ঢাকার মিডিয়া ম্যানেজারের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি এগিয়ে গিয়ে শাহজাদকে ধূমপান থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন।
তাতে শাহজাদ খুব একটা কান দেননি। ধূমপান করেই যেতে থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরে শাহজাদকে ধূমপান থেকে থামাতে এগিয়ে যান মিনিস্টার ঢাকার কোচ মিজানুর রহমান বাবুল ও ওপেনার তামিম ইকবাল। দুজন মিলে বুঝিয়ে শাহজাদকে ধূমপান করা থেকে বিরত রাখেন তারা। আফগান ব্যাটসম্যানকে এক প্রকার টেনেই ড্রেসিং রুমে নিয়ে যান বাবুল ও তামিম। তবে শাহজাদ যে তখন বিরক্ত হচ্ছিলেন, তা তার চেহারায় স্পষ্ট ছিল।
মাঠে এমন আচরণ ক্রিকেটের আইনের পরিপন্থী জানিয়ে বিসিবির প্রধান ম্যাচ রেফারি ও বিপিএল টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক রকিবুল হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এটা কোড অব কন্ডাক্টের বাইরে। খেলার মাঠে ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সে যদি এ বিষয়ে না জেনে থাকে, ম্যাচ অফিসিয়ালদের উচিত তাকে সতর্ক করা। যেন ভবিষ্যতে কেউ এমন না করে, সতর্ক থাকে।'
অনেক আগে থেকেই বিতর্কের সঙ্গে নাম জুড়ে আছে শাহজাদের। আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে আইসিসির তিরষ্কার পান তিনি। ২০১৬ বিপিএলে খেলা চলাকালীন সাব্বির রহমানের সঙ্গে শারীরিক সংঘর্ষের জেরে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হন শাহাজাদ, ম্যাচ ফির ৩০ শতাংশও জরিমানা হয় তাকে।
এ ছাড়া ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে ২০১৭ সালে ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন শাহজাদ। এরপর ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে আউট হওয়ার পর ব্যাট দিয়ে মাঠে আঘাত করায় নিষিদ্ধ হন দুই ম্যাচ, জরিমানা গুনতে হয় ১৫ শতাংশ। ২০১৯ সালে আফগান বোর্ডের আচরণবিধি ভাঙায় আবারও এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন শাহজাদ। এর বাইরেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আলোচনায় এসেছে তার নাম।