ওপেন স্পেস থিয়েটার: যেখানে শূন্য থেকে একজন শুরু করে দক্ষ অভিনেতায় পরিণত হয়
থিয়েটার দেখে বা এই শিল্পের প্রতি গভীর অনুরাগী দর্শকের সংখ্যা হাতে গোনা খুব কম বললেই চলে। তাই থিয়েটার শিল্পে কীভাবে অগ্রগতি ঘটানো যায় এবং থিয়েটারকে সব স্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা যায়, সে ভাবনা থেকেই বাংলাদেশের থিয়েটার জগতে ভিন্ন ধারার নতুন পথিকৃৎ হিসেবে 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু করে। থিয়েটার প্ল্যাটফর্মটির প্রতিষ্ঠা করেছেন মাহ্জাবীন চৌধুরি ও এম আরিফুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন দুজনের বিভাগ ভিন্ন থাকলেও নাটকের ক্লাবে কাজ করার সময় থিয়েটারে নিজেদের অভিনয়, নির্দেশনা ও সাংগঠনিক দূরদর্শিতার বিষয়গুলো তারা নিজেদের মধ্যে আবিষ্কার করেন।
বাংলাদেশের নাট্যচর্চায় বাস্তবিক অভিনয় প্রয়োগ ও মানসম্পন্ন প্রযোজনা নিয়ে কাজ করার প্রয়াস থেকে তারা সিদ্ধান্ত নেন নিজেরা একসঙ্গে থিয়েটার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবেন। যেখানে অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ, ও বিভিন্ন পেশার মানুষ যাদের অভিনয়ের প্রতি গভীর টান আছে, তাদেরকে সুযোগ করে দিয়ে থিয়েটার শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' প্লাটফর্মটি তৈরির মাধ্যমে তারা নিজেদের থিয়েটার চর্চার পাশাপাশি অন্য নতুন অভিনেতাদের পথচলায় সাহায্য করছেন।
মাহজাবীন চৌধুরি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী (সিইও)। তার সহকর্মী 'ওপেন স্পেস থিয়েটারের' নির্দেশক এম আরিফুর রহমান সম্পর্কে বলেন, "তিনি নির্দেশনায় যেমন দক্ষ, অভিনয়েও তেমনি পারদর্শী। নতুন অভিনেতাদের অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা আর আসক্তি গড়ে তোলায় তিনি অসাধারণ এবং তাদেরকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে তাদের মধ্যে থাকা সুপ্ত অভিনয় প্রতিভাবে তিনি বের করে আনতে বেশ দক্ষ । খুব সহজেই অনভিজ্ঞ অভিনেতার কাছ থেকেও তিনি অসাধারণ অভিনয় বের করে আনতে পারেন।"
আরিফুর রহমান নাটকের অনুশীলনের পরিচালনা, দল গঠন, নাটকের অনুবাদ, সংগীত আয়োজন থেকে পরিবেশনার যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অন্যদিকে মাহ্জাবীন চৌধুরি দর্শকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, টিকিট বিক্রি, পোশাক ডিজাইন, নাটকের উপযোগী করে মঞ্চ সাজানো থেকে শুরু করে সবরকম ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন। মঞ্চের পেছনের সার্বিক দেখাশোনা তাকেই করতে হয়।
এম আরিফুর রহমান সংগঠক হিসেবে তার সহকর্মী মাহজাবীন চৌধুরির কেমন সেই প্রসঙ্গে বলেন, "বলতে গেলে নেতৃত্বে উনি সর্বগুণে গুণান্বিত। শো এর আগে ও পরে প্রতিটা বিষয় সুনিপুণভাবে ঘটছে কিনা এটা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তিনি কখনো থামেন না"।
মাত্র দুজনের নেতৃত্বে এতোসব কাজ ও দায়িত্ব অবিশ্রান্ত ভাবে পালন করে যাচ্ছেন কীভাবে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে মাহজাবীন বলেন, "আমরা একে অপরের দায়িত্বে থাকা কাজগুলোতে হস্তক্ষেপ করিনা। তবে আমরা একে অপরের কাজে সহযোগিতা করি, পরস্পরের মতামতকে সম্মান করি ও গুরুত্ব দেই। তাছাড়া আমাদের মূল শক্তি আমাদের সদস্যরা। অভিনেতা, নেপথ্য শিল্পী, সংগঠক হিসেবে যে যার ক্ষেত্রে নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন, যোগ্য এবং স্বাবলম্বী।"
প্যাশন থেকে প্রফেশন
ছাত্র জীবনে দুজনেরই থিয়েটার করার প্রতি ছিল গভীর আগ্রহ। সেখান থেকে প্রথমদিকে প্যাশন থেকে শুরু করলেও কয়েকবছর পর দুজনেই থিয়েটার কে আগলে ধরেন নিজেদের কর্মজীবন হিসেবে। এম আরিফুর রহমান পড়াশোনা শেষ করে দীর্ঘ ১০বছর টেলিকম প্রকৌশলীর চাকরি করেছেন। কিন্তু তার ধ্যানে জ্ঞানে সবসময় ছিল থিয়েটার, তাই দীর্ঘ জীবনের করা চাকরি ছেড়ে দিয়ে থিয়েটারে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন। আর মাহ্জাবীন চৌধুরি কর্পোরেট পেশার দিকে না গিয়ে ক্যারিয়ার শুরুই করেছেন 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' দিয়ে। তারপর কেটে গেছে 'ওপেন স্পেস থিয়েটারের' যাত্রার ৫ বছর।
এই ৫ বছরে 'ওপেন স্পেস থিয়েটারের' ৩টি প্রযোজনা থেকে মোট ৩৮টি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে আমেরিকান টেলিভিশন ও ফিল্ম রাইটার 'রেজিনাল্ড রোজের' বিখ্যাত নাটক 'টুয়েলভ অ্যাংরি মেনের' শো হয়েছে ২৭ টি। 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' থেকে এই নাটকটির শো সবচেয়ে বেশি আয়োজিত হয়েছে। নাটকটির গল্প একটি কোর্টরুমের মধ্যে ১২জন বিচারককে ঘিরে। যেখানে এই ১২জন মিলিত হন অভিযুক্ত এক বালকের সাজার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। কিন্তু একটা সময় বিচারকদের মধ্যে মতের অমিল দেখা দেয় যা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে রূপ নেয়। এভাবেই গল্পটি এগিয়ে যায়।
বিট্রিশ লেখক 'আগাথা ক্রিস্টির' রহস্যময় খুনের কাহিনি নিয়ে নাটক 'এন্ড দ্যান দেয়ার ওয়্যার নানের' শো হয়েছে ৬টি এবং 'জোসেফ কেসেলরিং' এর হাস্যরসাত্মকমূলক নাটক 'আর্সেনিক এন্ড ওল্ড লেইসের' মোট ৫টি শো হয়েছে। প্রতিটি নাটকের জন্য প্রথমদিকে অভিনেতা ও কলাকুশলীদের টানা ৩/৪ মাস অনুশীলন করতে হয়। এই পর্যন্ত আয়োজিত ৩৮টি শো তে প্রায় ১৫হাজার দর্শক 'ওপেন স্পেস থিয়েটারের' মঞ্চনাটক দেখতে এসেছেন।
আরিফুর রহমান নিজে এই নাটকগুলোর পরিচালনা ও অনুবাদ করেন। শুধু তাই নয় উনি নাটকগুলোতে অভিনয়ও করেছেন। 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' তাদের প্রযোজিত নাটকগুলো অনুবাদের জন্য কপিরাইট স্বত্বাধিকারও নিয়েছে।
পরিচালক আরিফুর বলেন, "আমি ছাত্র জীবন থেকেই বিভিন্ন নাটকের অনুবাদ ও নির্দেশনার চর্চায় ছিলাম। কিন্তু এখন যখন পেশাগত জায়গা থেকে আমরা এই নাটকগুলো নিয়ে শো পরিচালনা করছি, আমরা নাটকগুলোর কপিরাইট সংরক্ষণের ব্যাপারে সচেতন ছিলাম। অন্য অনেকে এই বিষয়টাকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে থাকলেও, 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' লন্ডনের আগাথা ক্রিস্টি লিমিটেডের সাথে যোগাযোগ করে তাদের থেকে 'এন্ড দ্যান দেয়ার ওয়্যার নানের' অনুবাদের কপিরাইট ও প্রতিটি প্রদর্শনীর লাইসেন্স করিয়ে নিয়েছে, যা নির্দিষ্ট সময় পরপর রিনিউ করতে হয়"।
দুজনের উদ্যাগে থিয়েটারটি প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে 'ওপেন স্পেস থিয়াটারের' এক একটি প্রযোজনার সাথে ২৫ জন করে সদস্য যুক্ত আছেন। এরা সবাই দলের সদস্য, যাদের মধ্যে বেশীরভাগ অভিনেতা এবং বাকিরা মঞ্চের নেপথ্যকর্মী। এছাড়াও 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' মাসিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অভিনয়ের ওপর ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। ন্যূনতম ফি এর নিয়ে 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' ওয়ার্কশপের মাধ্যমে নতুন বা ইচ্ছুকদের অভিনয় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। প্রতি মাসের শুরুতে আগ্রহীদের অডিশনের মাধ্যমে ওয়ার্কশপের জন্য বাছাই করা হয় এবং বাছাইকৃত অভিনেতাদেরকে পরবর্তী ধাপে হাতে কলমে অভিনয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রতিমাসে ওয়ার্কশপে ৮টি করে ক্লাস নেওয়া হয়। এভাবে এক বছর পর 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' অভিনয়ের ওপর দক্ষতা মূল্যায়ন করে অভিনেতাদের সার্টিফিকেট প্রদান করে থাকে। ওয়ার্কশপ ছাড়াও নতুন নাটক নির্মাণের সময় তাৎক্ষণিক অডিশনে অংশগ্রহণ করে প্ল্যাটফর্মটিতে যোগদানের সুযোগ থাকে। নাটকে কোন চরিত্রে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে অভিনয়কেই সর্বাধিক প্রাধান্য দেয়া হয়। প্রতিযোগিতামূলক এবং যোগ্যতা নির্ভর সংস্কৃতি থাকায় নতুনদের ভেতরে ভালো অভিনয় করার তাগিদ থাকে এবং প্রায়ই নতুন অভিনেতারা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান।
'ওপেন স্পেস থিয়েটার' একদম নতুন অভিনেতাদেরকে (যাকে বলে শূন্য থেকে শুরু করা) প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেয়। এক্ষেত্রে তারা অভিজ্ঞতার সময়সীমার থেকে অভিনয়ে পারদর্শী ও দক্ষ অভিনেতাদের বেশি প্রাধান্য দেয়। পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, "আমাদের সংগঠনের সাথে জড়িত সকলের মতামতকে আমরা প্রাধান্য দেই। প্রতিষ্ঠিত কোন অভিনেতার মন্তব্য যদি যথাযথ হয় সেটি যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়, তেমনি নতুন অভিনেতাদের ভাবনা ও মতামতকে সমান গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। এখানে কোনরকম বিভাজন নেই।"
টিকিট নিয়ে আদ্যপান্ত
শুরুর দিকে 'ওপেন স্পেস থিয়েটারের' যাবতীয় ব্যয় ব্যক্তিগত অর্থায়নে করা হয়েছিল। পরিচালক আরিফুর রহমান ও মাহ্জাবীন চৌধুরি নিজেদের এই থিয়েটার প্রতিষ্ঠানটি দাঁড় করাতে প্রথমদিকে নিজেরা বিনিয়োগ করেন। তারপর একে একে নাটক আয়োজন করার মধ্য দিয়ে এবং সেগুলোর জন্য টিকিট বিক্রির থেকে যে আয় আসতে শুরু করে তা দিয়েই প্রতিষ্ঠানটির যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করা হয় ও যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। দর্শকদের মধ্যে কেউ কেউ নাটক ও অভিনয় দেখে এতো মুগ্ধ হয়েছিলেন যে নিজ থেকে যোগাযোগ করে কিছু অর্থ উপহারস্বরুপ থিয়েটারে পাঠিয়েছন।
অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই 'ওপেন স্পেস থিয়েটার' তাদের শো-এর টিকিট বিক্রি করে থাকে। এক্ষেত্রে তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ 'ওপেন স্পেস থিয়েটার'-এ শো অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েকমাস আগের থেকেই অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। মাহ্জাবীন বলেন, "টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে আমরা দর্শকদের জন্য কিছু চমকপ্রদ ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকি। যারা 'আরলি বার্ড' অর্থাৎ সবার আগে অগ্রিম টিকিট কিনেন তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি মূল্যছাড় দেওয়া হয়। আবার যারা বন্ধু বা পরিবারের সদস্যরা মিলে একত্রে অনেকগুলো টিকিট কিনেন তাদের জন্যও বিশেষ মূল্যছাড়ে টিকিট দিয়ে থাকি।"
"এভাবে আমরা কয়েকটি বিভাগে আমাদের বিক্রিত টিকিটগুলোতে ডিসকাউন্ট দেই। বেশিরভাগ সময়ই আমাদের শো এর টিকিট আগেভাগেই বিক্রি হয়ে যায় এবং যেগুলো বাকি থাকে তা শো এর পূর্বে টিকিট কাউন্টারে বিক্রি করা হয়। অগ্রিম টিকিট কিনে রাখা কোন দর্শক যখন বিশেষ কোন সমস্যার জন্য আসতে পারেন না, নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা তাদেরকে টিকিট মূল্য ফেরত দিয়ে থাকি অথবা পরবর্তী শো দেখার ব্যবস্থা করে দেই। এছাড়া ছাত্রদের জন্য বিভিন্ন ফ্রি টিকেট গেমসের ব্যবস্থা রয়েছে", বলছিলেন তিনি।
প্রতিবন্ধকতা
'ওপেন স্পেস থিয়েটারের' এতোদিনের পথচলা ও অভিজ্ঞতার গল্প বলতে বলতে মাহ্জাবীন চৌধুরি ও আরিফুর রহমান থিয়েটার করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, "ঢাকার মধ্যে মঞ্চনাটকের জন্য নির্ধারিত যে হল বা অডিটোরিয়ামগুলো আছে সেগুলো সংখ্যায় খুব কম। শিল্পকলায় ৩টি ও মহিলা সমিতির হলই থিয়েটারের জন্য নিয়মিত ব্যবহৃত হল। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হল বরাদ্দ পাওয়াটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামগুলো যদি সরকার শিল্প চর্চার জন্য ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করে দিতেন তাহলে থিয়েটার করার জন্য মিলনায়তনের কোন সংকট থাকতোনা"।
এছাড়া হলগুলোর বেশিরভাগই সেগুনবাগিচা থেকে বেইলিরোডের আশেপাশে হওয়ায় ঢাকার অন্যান্য জায়গাগুলোতে হল না থাকায় সেখানে মঞ্চনাটকের আয়োজন করতে পারেন না বলা জানান তিনি।
"আবার সেখানে যারা বসবাস করছেন তাদেরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মঞ্চনাটক দেখতে আসতে হয়। আমাদের আবেদন সরকারিভাবে উদ্যাগ নিয়ে ঢাকার প্রতিটি এলাকায় অন্তত একটি করে নাট্যমঞ্চের জন্য অডিটোরিয়াম তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এটা বাস্তবায়ন করা হলে এখন আমরা ঢাকার যেকোন জায়গায় যেমন রেস্টুরেন্ট দেখতে পাই, তেমনি একদিন মানুষ চাইলেই নিজ নিজ এলাকার আশেপাশে মঞ্চনাটক দেখতে পারবে। এভাবে শিল্প ও শিল্পী দুটোই বেঁচে থাকবে। আমরা চাই থিয়েটারকে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখতে", বলেন তিনি।