বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে কেন উধাও হয়েছিলেন মরক্কোর গোলকিপার বোনো?
গত রোববার (২৭ নভেম্বর) কাতারে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপে হয় এক অদ্ভূত দৃশ্যের অবতারণা। মরক্কোর গোলকিপার ইয়াসিন বোনো ছিলেন যার কেন্দ্রে। দেখে মনে হচ্ছিল- বেলজিয়ামের বিপক্ষে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে প্রস্তুত তিনি, কিন্তু তারপরই ঘটলো সে বিস্ময়। খেলা শুরুর কয়েক সেকেন্ড আগেই তাকে উধাও হতে দেখা যায় মাঠ থেকে। তার বদলে ব্যাকআপ মুনির মোহামেদি পান মরক্কোর গোলপোস্ট আগলানোর ভার। খবর এমএসএন নিউজের
স্বাভাবিক যেভাবে হলো অস্বাভাবিক
বোনোর মরক্কান নাম বোনৌ, সেখান থেকেই ক্লাব ফুটবলে পরিচিতি তার বোনো নামে। সেভিলের এই শটস্টপার ম্যাচের আগে ওয়ার্ম আপে স্বাভাবিকভাবেই অংশ নেন। তারপর ফিরেও যান ড্রেসিং রুমে। ম্যাচের আগে তাকে টানেলেও দেখা যায়। এমনকী মাঠে এসে দলের সাথে জাতীয় সঙ্গীতও গান। এপর্যন্ত সব ঠিকই ছিল।
কিন্তু, জাতীয় সঙ্গীত শেষে- টিম ফোটোতে দেখা গেল বোনো নেই সেখানে। সে জায়গায় চলে এসেছেন মোহামেদি। এই পরিবর্তন শুরুতে অনেকেই লক্ষ করেননি। এমনকী ম্যাচের প্রথম ৩৮ মিনিট পর্যন্ত মোহামেদিকে বোনো বলে উল্লেখ করেছিলেন বিবিসির ধারাভাষ্যকার গাই ম্যুরে। কিন্তু, প্রযুক্তির বদৌলতে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখেন শত শত কোটি দর্শক। তাদের অনেকেই এতে বিভ্রান্ত হন এবং বিষয়টি টুইটার পোস্টে উল্লেখ করতে থাকেন।
বোনো কেন উধাও হয়েছিলেন?
এনিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে একাধিক তত্ত্ব। বেলএন স্পোর্টস- এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়ার্ম আপের সময়েই ভার্টিগো নামক এক ধরনের ভারসাম্যহীনতার সমস্যায় পড়েন বোনো। কিন্তু, সেরে ওঠার আশাও করছিলেন। এজন্য ম্যাচ শুরুর আগপর্যন্ত অপেক্ষা করেন। হয়তো তিনি ভেবেছিলেন গ্রুপ এফ এই লড়াইয়ে অংশ নিতেও পারবেন। সেরে যাবে শারীরিক সমস্যা। কিন্তু, শেষমুহূর্তেও সুস্থবোধ না করায় মাঠ ছাড়েন তিনি।
৩১ বছরের বোনো মরক্কোর এক অপরিহার্য তারকা। ৪৭টি ম্যাচ খেলেছেন দলের হয়ে। নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন জাতীয় দলের এক নম্বর গোলরক্ষকের ভূমিকায়। অন্যদিকে ৩৩ বছরের মোহামেদি জাতীয় দলের হয়ে ৪৩ ম্যাচে খেলেছেন, ২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ আসরের শুরুর দিকে তিনিই ছিলেন গোলকিপার।
কাতার বিশ্বকাপে এপর্যন্ত সমর্থকদের নিরাশ করেনি মরক্কোর পারফরম্যান্স। বরং বিস্ময়েরও জন্ম দিয়েছে শক্তিশালী দুই ইউরোপীয় দল ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ড্র এবং বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে জিতে। এখন প্রশ্ন হলো- ১৯৮৬ সালের পর কি আবারও নকআউট পর্বে যেতে পারবে দলটি? আর বোনো কি এই গৌরবময় মিশনে উপস্থিত থাকতে পারবেন?