মা ও নবজাতকের মৃত্যুর জন্য সেন্ট্রাল হাসপাতাল দায়ী: সংযুক্তা সাহা
প্রসব বেদনা নিয়ে রাজধানীর গ্রিনরোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে আসা মাহবুবা রহমান আঁখি (২৫) ও তার নবজাতক সন্তানের মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
তার বিরুদ্ধে করা সেন্ট্রাল হাসপাতালের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ঘটনার সময় তিনি দেশে ছিলেন না।
মঙ্গলবার (২০ জুন) রাজধানীর পরীবাগে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. সংযুক্তা বলেন, তাকে না জানিয়ে মাহবুবা রহমান আঁখিকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
"যে মানুষটা দেশেই নাই তার নাম করে কেন রোগী ভর্তি করবেন? এটা কার স্বার্থে? আমি যদি অপারেশন না করি, যদি নাই থাকি, তাহলে রোগী ভর্তি করালেন কোন আক্কেলে? এটা অবশ্যই একটা বেআইনি ব্যবস্থা," বলেন তিনি।
সংযুক্তা সাহা দাবি করেন, সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধে তিনি যে সামাজিক আন্দোলন শুরু করেছেন, তার বিরুদ্ধে শত্রুতা থেকেই একটি পক্ষ এসব কাজ করছে।
"ওই মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা এই অনিয়মের সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান," বলেন তিনি।
এর আগে, সোমবার (১৯ জুন) সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএম নজরুল ইসলাম এ ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে ডা. সাংযুক্তা সাহা এবং অপারেশন থিয়েটারে কর্তব্যরত ডাক্তারদের দায়ী করেন।
তিনি বলেন, "গাফিলতি ছিল প্রথমত ডা. সংযুক্তা সাহার, তারপর ওটির চিকিৎসকদের। কারণ সে সময় তারা সিনিয়র ডাক্তারদের ডাকেনি।"
কেন একজন চিকিৎসককে প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, একই সঙ্গে এত রোগী দেখা এবং মানসম্মত সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
তবে ডা. সংযুক্তা সাহা সেটা করতেন বলে জানান তিনি।
গত ৯ জুন রাত ১২টার দিকে প্রসব বেদনা উঠলে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীন মাহবুবা রহমান আঁখিকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সে সময় ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। তবুও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং অপারেশন থিয়েটারে কাজ করছেন। নরমাল ডেলিভারির চেষ্টার পরও তা না করানো গেলে, রাত সাড়ে তিনটার দিকে আঁখির সিজারিয়ান ডেলিভারি করা হয়। ডেলিভারির পর আইসিউতে মারা যায় নবজাতক। এ ঘটনার পর ১০ জুন আঁখিকে সেন্ট্রাল হাসপাতাল থেকে ল্যাবএইড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানেই ১৮ জুন মারা যায় আঁখি।
এ ঘটনায় ওই সময় ওটিতে থাকা চিকিৎসক ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগে ১৪ জুন আঁখির পরিবার ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করে। পরে ধানমন্ডি থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লিখিত অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার ওপর সেন্ট্রাল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ সেবা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা দেয়।